ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৩০০ কোটি মানুষের বাজার ধরতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২২
৩০০ কোটি মানুষের বাজার ধরতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার প্রান্তে যুক্ত হয়ে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: ভৌগোলিক অবস্থানগত সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ৩০০ কোটি মানুষের বিশাল বাজার ধরতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনোমিক জোনের (জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল) উদ্বোধনকালে তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি এ আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের পাশাপাশি আঞ্চলিক বাজার ধরার সুবিধার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নিজস্ব মার্কেটের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বড় বাজার রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ উন্নত করে দিয়েছি। তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে, সেখানেও আমাদের বাজার আছে। কাজেই বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে উত্তম জায়গা বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ ৩০০ কোটির বেশি মানুষের বাজার হতে পারে। প্রায় ১৭ কোটি মানুষ আমাদের নিজেদেরই। আর পূর্ব দিকে ৫০ কোটি, উত্তর দিকে ১৫০ কোটি, পশ্চিমে ১০০ কোটি মানুষের বাজার রয়েছে। যোগাযোগ অবকাঠামো বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ থেকে পণ্য পরিবহনের বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে যারা বিনিয়োগ করবেন, নিজেরা সমৃদ্ধ হবেন, আমাদের দেশেরও উন্নতি হবে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগে বিভিন্ন দেশের আগ্রহের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। জাপানের পাশাপাশি আরও কিছু দেশ- ভারত, চীন ও সৌদি আরবসহ আরও অনেক দেশ আগ্রহ দেখিয়েছে। যারা আসবে, তারা যেভাবে চায়, আমরা সেভাবেই অর্থনৈতিক অঞ্চলে সুযোগ দেবো। তারা যেভাবে উন্নয়ন করতে চায়, করতে পারবে।

বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা। চমৎকার পরিবেশ আছে এখানে। কারণ আমরা সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব আইন করে দিয়েছি।

বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সেবা ও পরিসেবা অনুমোদনের ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কিছু জটিলতা থাকলেও আমরা তা নিরসন করছি। সবচেয়ে বড় বিষয়, বাংলাদেশ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন। এখান থেকে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে সমুদ্রপথ, আকাশ ও রেলপথ ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের সুযোগ আছে।
 
জাপানের জন্য বিশেষায়িত এ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সুবিধার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আশা করি, আজকের এই জাপানের উদ্যোগ অন্যান্যদেরও আগ্রহী করবে। জাপানকে ধন্যবাদ জানাই, তারা আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প করে দিচ্ছে। আমাদের ৫০ বছরের বন্ধুত্বের নিদর্শন। তাদের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্বে অনেক প্রকল্প আছে। ব্যবসাবান্ধব আরও অনেক প্রকল্প হবে, আশা করি।
 
যত্রতত্র কল-কারখানা না করার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষি জমি যাতে নষ্ট না হয়। যত্রতত্র যেন শিল্প কলকারখানা না হয়, সেজন্য যেখানে ফসল হয় না, সেই জমিতে আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিই। পরিবেশবান্ধব যাতে হয়, সে বিষয়টিতে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলবে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল উৎপাদন শুরু করেছে। তাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উপার্জন করতে পারছি। ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এগুলোর সবই করছি- একদিকে পরিবেশ রক্ষা, অপরদিকে ভূমি রক্ষা করে।
 
গণভবন প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
 
নারায়ণগঞ্জ প্রান্তে ছিলেন আড়াইহাজারের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, জাপানের সুমিতুমো করপোরেশনের সভাপতি ও সিইও মাসা উকি হিওদো।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২২
এমইউএম/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।