ঢাকা: বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা দলটির নেতাকর্মীদের কিছুক্ষণ পর আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টন এলাকা পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, পুলিশের ওপর হামলা করে কেউ রেহাই পাবে না। আমরা জানি কারা কালকে এই ধরনের আক্রমণ করার চেষ্টা করেছে বা করে যাচ্ছে। অনেকের নাম আমাদের কাছে রয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে সেটা বলছি না।
গ্রেফতার বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পল্টন থানায়, মতিঝিল থানায় কয়েকটি মামলা রুজু করা হচ্ছে। পুলিশের ওপর আক্রমণ- হামলা, বিস্ফোরক দ্রব্য, স্পেশাল পাওয়ারসহ বিভিন্ন ধারায় মামলাগুলো রুজু করা হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা আসামিদের আদালতে পাঠাবো।
কতজনকে আদালতে পাঠানো হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের সবাইকে আদালতে পাঠানো হবে। এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট করে সংখ্যা বলতে পারছি। তবে তিন-চারশ হবে।
বিএনপির ১০ তারিখের সভাস্থল নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সভাস্থল নিয়ে সিদ্ধান্তের কোনো অবকাশ নেই। ডিএমপি কমিশনার তাদের সমাবেশ করার জন্য অনুমতি দিয়েছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এটি নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই।
তিনি আরও বলেন, ডিএমপি কমিশনার যেহেতু বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে, এর বাইরে কেউ যদি রাস্তা বন্ধ করে মিটিং-মিছিল করতে চায়, তাহলে সেটা বেআইনি সমাবেশ হিসেবে দেখা হবে। আন ল ফুল অ্যাসেম্বলি আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপি কার্যালয়ের সামনের রাস্তা কবে নাগাদ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই রাস্তাটিকে মানুষের চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত মনে না করবো, ততক্ষণ পর্যন্ত এই রাস্তা বন্ধ থাকবে। কারণ কালকে এখানে বিভিন্ন ভবন থেকে পুলিশ ও সাধারণ মানুষের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করেছে। আমরাও বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে বিস্ফোরক, ককটেল উদ্ধার করেছি। আমাদের কাছে আরও তথ্য রয়েছে বিভিন্ন জায়গায় এগুলো মজুত রয়েছে। এসব বিস্ফোরক উদ্ধারে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের বোম ডিস্ফোজাল ইউনিটসহ বিভিন্ন ইউনিট কাজ করছে।
এদিকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর থেকে নয়াপল্টন এলাকায় পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। বিজয়নগরের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে পরিচয় দিয়ে হেঁটে চলাচল করতে পারছেন পথচারীরা।
এর আগে বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৩টায় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নয়াপল্টন। এদিন সকাল থেকেই বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন দলটির নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভিড়। এক পর্যায়ে রাস্তার একপাশ বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে যায়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
সংঘর্ষের সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। জবাবে পুলিশও পাল্টা টিয়ার শেল ও শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে। এতে নিহত হন মকবুল নামের একজন, আহত হয় বিএনপির অর্ধশত নেতাকর্মী।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২২
এসসি/এসআইএস