ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আজ নড়াইল মুক্ত দিবস

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২২
আজ নড়াইল মুক্ত দিবস আজ নড়াইল মুক্ত দিবস

নড়াইল: আজ (১০ ডিসেম্বর) নড়াইল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে মিত্র বাহিনীর কোনো প্রকার অংশগ্রহণ ছাড়াই নড়াইলের বীর মুক্তিযোদ্ধারা এ জেলাকে সম্পূর্ণভাবে শত্রুমুক্ত করতে সক্ষম হন।

সামগ্রিক মুক্তিযুদ্ধের বিশাল ক্যানভাসে নড়াইল দেশের একটি ক্ষুদ্র এলাকা হলেও মুক্তিযুদ্ধে নড়াইলের রয়েছে গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস।

শোষন বঞ্চনাহীন সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার মুক্তি সংগ্রামের সেই চেতনা সঠিক বাস্তবায়নের প্রত্যাশায় অজও দিন গুনছেন এখানকার সেই সব বীর সেনারা।

দিবসটি পালন উপলক্ষে নড়াইলের জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকালে শহরের রুপগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস চত্বর থেকে একটি বিজয় র‌্যালী শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে গণকবর, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল প্রদক্ষিণ করবে। এরপর ৭১-এর বধ্যভূমি ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভা, এনভায়রনমেন্টাল থিয়েটারের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপস্থাপনা, বিকেলে ৯০ এর গণঅভ্যুথানের সহযোদ্ধাদের আয়োজনে আলোচনা সভা ও কবিতা আবৃত্তি এবং সন্ধ্যায় জারি গানের আয়োজন করা হয়েছে।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে দশ লাখ মানুষের বিশাল জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে স্বাধীনতার যে আহ্বান ছিল, নড়াইলের মুক্তি পাগল জনতা তা থেকে পিছপা হয়নি। নড়াইল ছিল মুক্তিযুদ্ধে ৮নং সেক্টরের অধীন রণ কৌশলগত এলাকা। প্রথম দিকে ওসমান চৌধুরী এবং পরবর্তীতে মেজর মঞ্জুর নেতৃত্ব দেন এ সেক্টরের। এ সময় অস্ত্রাগারের তালা ভেঙে অস্ত্র সংগ্রহের মধ্য দিয়ে প্রতিরোধ সংগ্রামের সূচনা করে নড়াইলের মুক্তি পাগল জনতা। পরে তারা ভারত গিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে হানাদারদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এর এক পর্যায়ে প্রায় দু’শতাধিক পাকিস্তান সেনাসহ রাজাকার-আলবদরদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে কালিয়া থানা মুক্ত হয় ২৪ নভেম্বর।

লোহাগড়া মুক্ত হয় ৭ ডিসেম্বর। নড়াইল শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা চিত্রা নদীর পূর্ব তীর থেকে ৯ ডিসেম্বর মুক্তি যোদ্ধাদের সম্মিলিত চূড়ান্ত আক্রমণ পরিচালিত হয় নড়াইল শহর মুক্ত করতে। বর্তমান পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ে অবস্থিত নড়াইলে পাক হানাদারদের সর্বশেষ ঘাটি দখলের মধ্যদিয়ে ১০ ডিসেম্বর সম্পূর্ণভাবে শত্রু মুক্ত হয় নড়াইল।

মহান মুক্তিযুদ্ধে নড়াইলের পাঁচজন খেতাব প্রাপ্ত হন। তারা হলেন- বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ, বীর উত্তম মুজিবুর রহমান, বীর বিক্রম আফজাল হোসেন, বীর প্রতীক খোরশেদ আলম, ও বীর প্রতীক মতিয়ার রহমান।

১৯৭১ সালে ১৪ ডিসেম্বর ৮নং সেক্টরের অধীন নড়াইলে আসেন মেজর মঞ্জু। পরে মুক্তি পাগল হাজারও জনতার উপস্থিতিতে ডাকবাংলো প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২২
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।