ফরিদপুর: অপারেশন শেষে সুস্থ হয়ে বাড়িতে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে গেছেন পায়ে পচন-পোকা ধরা রিনা (৩০) নামে সেই হতভাগিনী।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রিনাকে বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
হাসপাতালটিতে কর্মরত নাসির উদ্দিন নামের জেলা পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগে কাজ করা এক যুবক নিজ খরচে তাকে (রিনা) বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
বিকেল ৫টার দিকে রিনা তার নিজ বাড়ি শরীয়তপুরের সখিপুর থানার চরহোগলা গ্রামে পৌঁছান। এ তথ্য বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন রিনার চাচা আব্দুর রহমান খোকন।
চাচা খোকন বলেন, রিনা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। পরে কয়েক মাস আগে তাকে চিকিৎসা করানোর জন্য পাবনার মানসিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু, রিনা সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে নিখোঁজ ছিল। এ পরিস্থিতিতে রিনা হয়তো আর বেঁচে নেই পরিবার-স্বজনরা সবাই ধারণাও করেছিলাম। পরে ১১ ডিসেম্বর বিকেলে রিনা বাড়িতে পৌঁছালে সবাই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ি।
রিনাকে সুস্থ করে বাড়িতে ফেরানো পর্যন্ত যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে চাচা খোকন বলেন, রিনার বাবা-মা বেঁচে আছেন। তারা, তিন ভাই ও এক বোন। রিনা সবার বড়। কয়েক বছর আগে বিয়ে হয়েছিল রিনার; কিন্তু সেখান থেকে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে সে। রিনার কোনো ছেলে-মেয়ে নেই। তবে, তাদের পরিবারও ততটা স্বচ্ছল না। রিনা সামনের দিনে কীভাবে চলবে সেটাই চিন্তা। তাই সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করছি।
এ ব্যাপারে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এনামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রিনাকে সুস্থ করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অসহায়দের প্রতি আন্তরিকতার কোনো অভাব থাকে না। এর জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত রিনা। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিও ধন্যবাদ জানান।
এর আগে, গত ২৪ নভেম্বর ‘পচন ধরেছে রিনার পায়ে, বাসা বেঁধেছে পোকাও!’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে বাংলানিউজ। সংবাদটি প্রকাশের পরপরই নড়েচড়ে বসে বিএসএমএমসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে তাকে (রিনা) তড়িঘড়ি করে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। পরে গত ২৯ নভেম্বর হাসপাতালে তার পায়ের অপারেশন করা হয়। রিনার অপারেশন হওয়ার পর "অবশেষে হতভাগিনী রিনার পচনধরা পায়ে অপারেশন" শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলানিউজ। পায়ের অপারেশনের শেষে হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন চিকিৎসায় সুস্থ হওয়ার পর অবশেষে ১১ ডিসেম্বর তাকে তার বাড়িতে বাবা-মায়ের কাছে পাঠানো হলো।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২২
এসআরএস