ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গতিশীল হচ্ছে বিমানবন্দরের যাত্রীসেবা

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২২
গতিশীল হচ্ছে বিমানবন্দরের যাত্রীসেবা

ঢাকা: সম্প্রতি বিমানবন্দরের কার্যক্রম আধুনিকায়ন করতে বেশ তৎপরতা দেখাচ্ছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এরই ধারাবাহিকতায় বিমানবন্দরে যুক্ত হচ্ছে বেশ কিছু আধুনিক সেবা কার্যক্রম।

পাইলট প্রকল্প হিসেবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চালু হচ্ছে বেশ কয়েকটি ডিজিটাল সার্ভিস।

এরমধ্যে আছে ডিজিটাল এয়ারপোর্ট সার্ভিস অ্যাপস, হাইট ক্লিয়ারেন্স ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক অ্যাপস। পাশাপাশি বিমানবন্দরে কর্মরত এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চিপ সম্বলিত ডিজিটাল নিরাপত্তা পাসও চালু হচ্ছে চলতি মাসের শেষে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এয়ারপোর্ট সার্ভিস অ্যাপসের মাধ্যমে বিমানবন্দরের যাত্রীরা বাসায় বসে ফ্লাইট সম্পর্কিত সব আপডেট তথ্য সহজেই জানতে পারবেন। পাশাপাশি বিমানবন্দরে চেকইনসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার প্রয়োজনীয় সেবা নিতে পারবেন।

এ অ্যাপসের মাধ্যমে প্রবাসীরাও বিমানবন্দরে উপকৃত হবেন বলে আশা করে হচ্ছে। ডিজিটাল এয়ারপোর্ট সার্ভিস নামক মোবাইল অ্যাপসটিতে অত্যাধুনিক দুটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর একটি হলো অপমেন্টেড রিয়ালিটি (এআর) ইনডোর লোকেশন সার্ভিস। বিমানবন্দরের ভেতরে কী কী করণীয়, কিভাবে করতে হবে তার বিস্তারিত সব কিছু জানা যাবে এআর’র মাধ্যমে। অপরটি হচ্ছে ভয়েস সুবিধা। যা ব্যবহার করে সহজেই বাংলা ও ইংরেজিতে বিমানবন্দরে করণীয় সংশ্লিষ্ট সব তথ্য ও নির্দেশনা সহজেই মিলবে।

এ অ্যাপসে থাকবে বিমানবন্দরের সম্পূর্ণ এলাকা ও চলাচলের মানচিত্রও। এছাড়া বিমানবন্দরের বাইরের পরিবহনসহ বিভিন্ন সুবিধা সহজ ও সঠিক পদ্ধতিতে গ্রহণ করতে পারবেন যাত্রীরা। প্রাইমটেক সলিউশন লিমিটেড, স্পিনঅপ স্টুডিও অ্যান্ড ইনোভেজিয়ন টেকনোলজিস যৌথভাবে এ অ্যাপস তৈরি করেছে।

জানা গেছে, ডিজিটাল এয়ারপোর্ট সার্ভিস অ্যাপসের পাশাপাশি ভবনের উচ্চতা নির্ধারণে আরেকটি অ্যাপস তৈরি করেছে বেবিচক। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের সব বিমানবন্দরের অবস্টেকল লিমিটেশন সারফেস (ওএলএস) অন্তর্ভুক্ত এলাকার ভবন নির্মাণে প্রযুক্তির সহযোগিতা নেবে বেবিচক। মূলত বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ১৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে যেকোনো জায়গায় ভবন বা স্থাপনা নির্মাণে বেবিচক থেকে উচ্চতার ছাড়পত্র নিতে হয়। এ নির্দিষ্ট দূরত্বের এলাকাকেই ওএলএস এলাকা বলা হয়। বর্তমানে বেবিচকের এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে এটি দেওয়া হয়ে থাকে। ওএলএস এলাকায় ভবন বা ইমারত নির্মাণে এ ছাড়পত্রের দরকার হয়। বর্তমানে ম্যানুয়ালি দেওয়া হলেও অ্যাপস চালু হলে সংশ্লিষ্টরা সহজেই আধুনিক উপায়ে উচ্চতার ছাড়পত্র সুবিধা নিতে পারবেন।

জানা গেছে, স্থাপনা নির্মাণে উচ্চতার ছাড়পত্র দিতে মোবাইল অ্যাপস ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুশাসন দেওয়া হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আধুনিক উপায়ে উচ্চতার ছাড়পত্র দিতে হাইট ক্লিয়ারেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অ্যাপসকেন্দ্রিক করার সিদ্ধান্ত নেয় বেবিচক। প্রাথমিকভাবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও তেজগাঁও বিমানবন্দর বিবেচনায় রেখে একটি অ্যাপস প্রস্তুত করা হয়। গত ৩০ জুন থেকে এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে।

বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা, উচ্চতা নির্ধারণের পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদারের লক্ষ্যে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। নতুন নীতিমালায় অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে আধুনিক (ডিজিটাল) চিপ সম্বলিত নিরাপত্তা পাস ব্যবহার চালু হচ্ছে। এতে বাতিল হবে আগের ইস্যু করা পাসগুলোও।

এসব বিষয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অধীনে কাজ করে যাচ্ছি। সম্প্রতি যে দু'টো অ্যাপস চালু হওয়ার কথা যেকোনো মোবাইল ফোনে গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপস দুটি ডাউনলোড করে সেবা পাওয়া যাবে। এতে ফ্লাইট সম্পর্কিত তথ্য, গন্তব্য, মানচিত্র, বিমানবন্দরের বিভিন্ন ডেটাসহ নানা ধরনের সেবা মিলবে। এছাড়া বিমানবন্দরে কর্মরত প্রায় ৩০টির বেশি সংস্থার সেবাও মিলবে ডিজিটাল সার্ভিস অ্যাপসের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, যাত্রীদের সেবার জন্য সিআরএম’র অধীনে একটি সহায়তা কেন্দ্র চালু হচ্ছে যেখানে ২৪/৭ যাত্রীরা ফোন করে বিভিন্ন তথ্য ও সেবা নিতে পারবেন। এরই মধ্যেই স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক এ রকম একটি সার্ভিস সেন্টার আমরা চালু করেছি। এছাড়াও আমাদের আরেকটি পরিকল্পনা আছে একটি ওয়েবপোর্টাল তৈরি করার। এটার কাজ শুরু হয়েছে। যেখানে যাত্রীরা তাদের ফিডব্যাক (মতামত) এবং কমপ্লেইনগুলো (অভিযোগ) দিতে পারবেন।

ডিজিটাল পাস বিষয়ে তিনি বলেন, বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে নতুন নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিমানবন্দরে নতুন ডিজিটাল অ্যাক্সেস কন্ট্রোল ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার স্থাপন করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, বোর্ডিং কার্ড ইস্যু কাউন্টারসহ বিমানবন্দরের বিভিন্ন নিরাপত্তা গেট। চলতি মাসেই আধুনিক পাস উদ্বোধন হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২২
এমকে/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।