নীলফামারী: দেখতে চিকন ও খেতে সুস্বাদু বিআর-৩৪ নামের পোলাওয়ের ধান স্থানীয়ভাবে পরিচিতি পেয়েছে বেগুন বিচি বলে। এই ধানটি দেখতে অনেকটা বেগুনের বিচির মতো হওয়ায় এমন নামে পরিচিতি ছড়িয়েছে।
নীলফামারী জেলায় এই ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। ফলন কম হলেও দামের কারণে প্রতি বছরই এর আবাদের পরিধি বাড়ছে। বড় বড় কোম্পানি এসব ধান কিনে চিনিগুড়া বলে প্যাকেটজাত করে।
জেলায় এ বছর বিস্তীর্ণ জমিতে বেগুন বিচির আবাদ হয়েছে। এক বিঘা (৬০ শতাংশ) জমিতে অন্যান্য ধান ৪০ থেকে ৪২ মণ উৎপন্ন হলেও এই ধান ফলে ২৮ থেকে ৩০ মণ। কিন্তু অন্যান্য ধানের বস্তা (৭২ কেজি) দুই হাজার ৫০ টকায় বিক্রি হলেও বেগুন বিচি দাম পাওয়া যায় চার হাজার ৮০০ টাকা। স্থানীয় হাটবাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
জেলার সৈয়দপুরের কামারপুকুর ইউনিয়নের দলুয়া চৌধুরীপাড়ায় এই ধান মাড়াই করছিলেন একদল কৃষক। তারা জানান, ধানটি শেষের দিকে কাটতে হয়। এ বছর তেমন পোকা-মাকড়ের আক্রমন হয়নি। তাই ফলন ভালো হয়েছে। ক্ষেতের ধান কেটে ২-৪ দিন শুকানোর পর গৃহস্থ বাড়িতে নিয়ে মাড়াই করা হয়।
নীলফামারীর জলঢাকার গোলমুন্ডার কৃষি শ্রমিকরা বেগুন বিচি ধান কাটছেন আপন মনে। তারা জানান, এ সময় কাজ-কাম একটু কম। তাই কৃষকের ধান কাটছি। ধান পড়ে যাওয়ায় কাজ করতে একটু অসুবিধা হচ্ছে।
কৃষক আমিমুল রেহসান বলেন, দামের তুলনায় চিকন ধান বেশি লাভজনক হওয়ায় এর চাষ বেড়েছে। এবার আমি চার বিঘা জমিতে চিকন ধান চাষ করেছিলাম। বিঘা প্রতি ২৮-৩০ মণ ধান হয়েছে। ৭২ কেজি ওজনের এক বস্তা চিকন ধান (ব্রি-৩৪) ৪ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করছি। এই দাম মোটা ধানের তুলনায় অনেক বেশি। জামাই আদরের জন্য এই ধানের পোলাওয়ের চালের জুড়ি নেই।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়রা মণ্ডল বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অনেক জমিতে বিআর-৩৪ জাতের চিকন ধান আবাদ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি কালোজিরা, সুগন্ধি, কঠারি ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। ফলন কম হলেও দাম ভালো পাওয়ায় অনেকটা লাভবান হচ্ছেন তারা। আর তাদের আবাদের বিষয়ে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে সব সময় পাশে থাকছে কৃষি বিভাগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২২
এফআর