ঢাকা, সোমবার, ৪ কার্তিক ১৪৩২, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

স্বজনরা চোখের জলে বুঝে নিলেন পুড়ে যাওয়া ১৬ লাশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:৫৩, অক্টোবর ২০, ২০২৫
স্বজনরা চোখের জলে বুঝে নিলেন পুড়ে যাওয়া ১৬ লাশ লাশ বুঝে নিচ্ছেন স্বজনরা

ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরের রুপনগরের শিয়ালবাড়ি কেমিক্যালের গোডাউন ও পোশাক কারখানায় লাগা আগুনে নিহত ১৬ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। স্বজনরা চোখের জলে বুঝে নিচ্ছেন এক এক করে লাশ।

রোববার (১৯ অক্টোবর) রূপনগর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে স্বজনদের কাছে লাশ বুঝিয়ে দেওয়ার হয়েছে।

মর্গে উপস্থিত থাকা মিরপুর বিভাগের রূপনগর থানার (পরিদর্শক তদন্ত) মোখলেসুর রহমান বলেন, রাতে মালিবাগ সিআইডি ফরেনসিক থেকে ১৬ লাশের ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। সেই অনুযায়ী খবরের মাধ্যমে শনাক্ত স্বজনরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে উপস্থিত হলে এক এক করে তাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।  

প্রতিটি লাশের স্বজনদের সরকারের তরফ থেকে ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে দাফন ও ধর্ম অনুযায়ী নিয়ম মাফিক কার্যক্রম করার জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গসূত্রে জানা যায়, ১০টার দিকে লাশ হস্তান্তর শুরু হলেও রাত ১টা পর্যন্ত ১৬ লাশ প্রতিটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় প্রতিটি পরিবার চোখের জল ফেলে লাশগুলো বুঝে নেয়।

যে লাশগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হলো- বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার মৃত ওমর ফারুকের মেয়ে মাহিরা আক্তার (১৪), ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার দলিগর নগর গ্রামের ওয়াজি উল্লাহ'র মেয়ে নার্গিস আক্তার (১৮), শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার নিজ পাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে ছানোয়ার হোসেন (২৫), গাইবান্ধা সদর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে নূরে আলম সরকার (২৩), বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার দাড়ি কাটা গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে আল মামুন (৩৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার তিলকনগর গ্রামের নজু মিয়ার ছেলে রবিউল ইসলাম রবিন (২০), সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার গোল্লা রাজাপুর গ্রামের রতন মিয়ার মেয়ে ফারজানা আক্তার (১৫), বরগুনা সদর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে খালিদ হাসান সাব্বির (২৯), নাটোরের সিংড়া উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে আব্দুল আলিম (১৪), নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার নুরুল্লা গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে জয় মিয়া (২০), নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার সাউথখালী গ্রামের নয়ন মিয়ার মেয়ে আসমা আক্তার (১৩), নেত্রকোনার মদন উপজেলার কদমশ্রী গ্রামের সনু মিয়ার মেয়ে মুনা আক্তার সামিয়া (১৬), লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পশ্চিম নওদাবাস গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে মৌসুমী খাতুন (২২), শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর গ্রামের মুছা দেওয়ানের মেয়ে মুক্তা বেগম (৩৬), নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার জয়পুর গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে তোফায়েল আহমেদ (১৮) ও কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামের নাজমুল ইসলাম রিয়াজ (৪০)।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ অক্টোবর মিরপুর রুপনগর শিয়ালবাড়ি এলাকায় কেমিক্যাল গোডাউন ও পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা একাধিক ইউনিট ব্যবহার করে একপর্যাযয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও নির্বাপনের ঘোষণা দেন। পরে পোশাক কারখানার ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ১৬ লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

সেদিন রাতে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ১৬টি লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একে একে ১৬ লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন ও প্রতিটি লাশ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

এজেডএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।