ময়মনসিংহ: ২০১৯ সালে গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ৩৯ পেয়েছিলেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার দলিত সম্প্রদায়ের বাসিন্দা প্রিয়া রানী দাস (১৯)। ২০২১ সালে গৌরীপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় তিনি জিপিএ-৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
উচ্চশিক্ষা অর্জনের এত বড় সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে, এমন আশঙ্কায় দিন কাটছে গৌরীপুর পৌর শহরের কালীপুর মধ্যমতরফ এলাকার বাসিন্দা দিলীপ দাস ও জয়ন্তী রানী দাসের মেয়ে প্রিয়ার। জরাজীর্ণ ভাড়া বাসায় বাবা-মা ও তিন ভাইবোন নিয়ে বসবাস করেন তিনি।
প্রিয়ার বাবা দিলীপ দাস একজন প্রাইভেট টিউটর। কাজ করেন দলিল লেখjদের সহায়ক হিসেবে। একটি স্থানীয় পত্রিকায়ও লেখালেখি করেন। এসব থেকে যা আয় করেন, তা দিয়ে সংসার ঠিক মতো চলে না তার। মেয়ের পড়াশোনার পেছনে বেশ অর্থ খরচ হবে। রয়েছে আরও সন্তান, তাদের পড়াশোনা নিয়েও চিন্তা করতে হয় দিলীপকে। সংসারে হিমশিম অবস্থা হলেও মেয়ের উচ্চ শিক্ষার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে দিলীপের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। তিনি বলেন, মেয়েকে ভর্তির জন্য টাকা ম্যানেজ করতে আজ সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। কোথাও পাইনি। ২৯ ডিসেম্বর মেয়ের ভর্তির শেষ তারিখ। আগামীকাল বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকায় যেতে হবে।
আমার মেয়ে মেধা তালিকায় ৫৩তম হয়েছে। ভর্তির সুযোগ পেয়েছে দলিত কোটায়। তাকে ভর্তি করতে ১০ হাজার ৪০০ টাকা প্রয়োজন। ঢাকায় থাকা, আসা-যাওয়ায় আরও ১৫ হাজার টাকা প্রয়োজন। কোথাও টাকা না পাওয়ায় মেয়ের ভর্তি নিয়ে আশঙ্কায় আছি।
প্রিয়া বলেন, বাবা-মা কষ্ট করে সংসার চালান। বহু কষ্ট করে পড়াশোনা করেছি। আমি বিসিএস ক্যাডার হতে চাই। বাবা এখনও টাকার ব্যবস্থা করতে পারেননি। কী করবো, আমার স্বপ্নের কী হবে, তা নিয়ে আমি চিন্তিত।
প্রিয়া দাসের পড়াশোনায় সবার সহযোগিতা চেয়েছেন গৌরীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মিল্টন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আমরা সব সময় তার পড়াশোনায় সহযোগিতা করেছি। প্রিয়া দলিত সম্প্রদায়ের আলো। সেই আলো যাতে নিভে না যায়, সবার সহযোগিতা করা দরকার। আমি এ ব্যাপারে সবার কাছে সহযোগিতা চাই।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
এমজে