বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা দেওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশনে বসছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আন্দোলনকারীদের সাথে সংহতি জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
সামান্তা শারমিন বলেন, সংবিধান নিয়ে ঐক্যমত্য কমিশন অনেক বোঝাপড়া করতেছে। আমরা কমিশনে বোঝাপড়া করতে চেয়েছিলাম শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে। আমরা এগুলা নিয়ে বোঝাপড়া করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের ভাগবাটোয়ায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এনসিপি তো ভাগবাটোয়ারায় যায় নাই। ভাগবাটোয়ারার স্বাক্ষর তো কালকে হয়েছে। আমরা বলছি সব নাগরিকের কাছে যদি উন্মুক্ত করা না হয়, সামনে তাদের দিনে কী আসতেছে সেটার মধ্যে এনসিপি স্বাক্ষর করবে না। এভাবে করে সব নাগরিকের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমরা যেকোনো যৌক্তিক দাবির পাশে থাকতে বাধ্য। এটা আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে বোধ করি। কিন্তু বাকি রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে এটা আপনারা নাও দেখতে পারেন। এতে আশা হত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
তিনি আরও বললেন, যারা সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকবে তারা যে এক সময় বিজয়ই হবে তা ১৫ বছরের পরে আমাদের ২ হাজার মানুষ হারায়ে, ৫০ হাজার মানুষ অঙ্গহানি হওয়ার পরে আমরা শিখছি। এটা ভুলে যাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, নতুন একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে হবে। যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের মর্যাদা কোনভাবেই ক্ষুন্ন হবে না। শিক্ষকদের মর্যাদা কোনভাবেই ক্ষুন্ন হবে না। শিক্ষাকে রাষ্ট্রের মুখোমুখি দাঁড় করানো যাবে না। আপনারা মাঠ ছাড়বেন না আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, আমাদের বোঝাপড়া যখন শুরু হয় তখন থেকেই আমরা শুনি শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। আর শিক্ষকরাই হলেন জাতি গড়ার কারিগর। যাদের জাতি গড়ার কারিগর বলা হল সেই কারিগররা যদি নিজের সংসার চালাতে না পারেন, চিকিৎসার খরচটুকুও না পান, বাসা ভাড়া দিতে না পারেন, উৎসবে অংশগ্রহণ করার সামর্থ যদি তার না থাকে সেই কারিগরের পক্ষে কি একটা জাতি গঠন করার মতো পরিস্থিতি হওয়া সম্ভব? আমাদের শিক্ষকরা চিকিৎসা ভাতা পাবে না। বাড়ি ভাড়া বাতা পাবে না। উৎসব পাতা পাবে না। আমাদের শিক্ষকেরা পর্যাপ্ত পরিমাণ উৎসব ভাতা পাবে না। আমাদের শিক্ষকদের এমন অবহেলার মধ্যে রেখে আমরা কি বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো? বাংলাদেশকে যদি আমরা নতুন করে গড়তে চাই। আমরা যদি চাই আমাদের শিক্ষকরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে গড়ে তুলবেন। সঠিক জ্ঞানের শিক্ষা দেবেন। সঠিকভাবে দক্ষ এবং জ্ঞানী করে গড়ে তুলবেন। তাহলে সবার আগে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয়তার ওপর আমাদের মূল্য দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের অভাবের মধ্যে রেখে শিক্ষার্থীদের উপকার করা, দেশ গঠন করা সম্ভব হবে না। শিক্ষকরা এক সাপ্তাহ ধরে এখানে রয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সারা আমরা দেখি নাই। আমাদের শিক্ষকরা রাজপথে এসেছেন তাদের তো রাজপথে আসার কথা নয়। অত্যন্ত যৌক্তিক দাবি নিয়ে তারা এসেছেন। তারা মাস শেষে তাদের বাসা ভাড়াটুকু দিতে চান। তারা অসুস্থ হলে চিকিৎসাটুকু করতে চান। কোনো উৎস আসলে তারা স্বজনদেরকে নিয়ে উদযাপন করতে চান। শিক্ষকরা বিলাসী জীবন চান না। অথচ সেই দাবি নিয়ে আসার পরেও তাদের উপর হামলা করা হয়েছে।
এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে শিক্ষকদের ওপরে হামলা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এমআই/এমআইএইচ