ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চাঁদাবাজি বন্ধে কালীগঞ্জে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
চাঁদাবাজি বন্ধে কালীগঞ্জে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের কাকিনা-মহিপুর সড়কের চাঁদাবাজি ও ভারী যান চলাচল বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করেছেন শ্রমিকরা।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে কালীগঞ্জের কাকিনা গংগাচওড়া শেখ হাসিনা সেতু পাড়ের মহিপুর বাইপাস সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা।

জানা গেছে, লালমনিরহাটের সঙ্গে রংপুর শহরের যোগাযোগ সহজ করতে কালীগঞ্জ উপজেলার রুদ্দেশ্বর ও রংপুরের গংগাচওড়া উপজেলার মহিপুর এলাকায় তিস্তা নদীর ওপর গংগাচওড়া শেখ হাসিনা সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর। ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ ও ১২ দশমিক ১ মিটার প্রস্থের এ সেতুটি ১২০ দশমিক ০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর। ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টোল ফ্রি হিসেবে এ সেতুর উদ্বোধন করেন।  

সাধারণ জনগণের পথ সহজ করতে সেতু হয়ে ছোট ছোট যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। প্রথম দিকে সেতু হয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধে সড়কটির সিরাজুল মার্কেট এলাকায় বেড়িকেট নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ।  

এ সড়কটির পাশে রয়েছে বুড়িমারী রংপুর মহাসড়ক। যেখানে লালমনিরহাট শহর হয়ে রংপুর যেতে হয়। এ মহাসড়কের লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা এলাকায় তিস্তা নদীর ওপর তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণ করে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ। যেখানে প্রতিটি যানবাহনকে টোল দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এ সেতু দিয়ে সরকার প্রতি বছর প্রায় হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করছে।

গত সপ্তাহে হঠাৎ গংগাচওড়া শেখ হাসিনা সেতুর বেড়িকেট তুলে দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর। এরপর থেকে এ সেতু হয়ে পারাপার করছে ভারী সব যানবাহন। টোল ফ্রি ও পথ কমে আসায় বুড়িমারী স্থলবন্দর হতে রংপুরগামী সব ভারী যানবাহন এ পথে যাতায়াত শুরু করে। বেড়িকেট খুলে দেওয়ার পাঁচ দিনেই এ সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যেতে শুরু করেছে। সেতুসহ সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।  

এতে সওজ বিভাগের বুড়িমারী রংপুর মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা একদম কমে যায়। ফলে প্রায় হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।  

অন্যদিকে, এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র গংগাচওড়া শেখ হাসিনা সেতুর সড়কে ট্রাক ও বাস প্রতিটি ৫০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করছে। টোল ফ্রি ও পথ কমে যাওয়ায় চাঁদা দিয়েও মহিপুর সড়কে যানবাহন চালাচ্ছেন চালকরা। ফলে মহিপুর কাকিনা সড়কটি যেমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। তেমনি সওজ বিভাগের তিস্তা সড়ক সেতুতে যানবাহনের অভাবে হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

রাজস্ব ফাঁকি বন্ধে এবং গংগাচওড়া শেখ হাসিনা সেতুর টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে এ সড়কে পুনরায় বেডিকেট দিয়ে ভারী যানবাহন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে স্থানীয় শ্রমিকরা। থ্রি হুইলার এলপিজি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধন করেন স্থানীয় শ্রমিকরা। মানববন্ধন শেষে সড়কে বসে অবরোধ করে সমাবেশ করেন তারা। এ সময় দুই পাড়ে কয়েক শত যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহির তাহু, কালীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শাহা সুলতান নাসির উদ্দিন, কালীগঞ্জ থ্রি হুইলার এলপিজি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি হযরত আলী, সম্পাদক নুর নবী ইসলাম, এ সংগঠনটির হাতীবান্ধা শাখার সভাপতি  বাবলু ও সম্পাদক রিন্টু মিয়া প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।