ঢাকা, শুক্রবার, ২ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২২ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

সরেজমিন বাঁশখালীর সাধনপুর

বেড়িবাঁধ নির্মাণে বাধা ফুঁসে উঠেছে মানুষ

. | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:১৯, জুলাই ১৮, ২০২৫
বেড়িবাঁধ নির্মাণে বাধা ফুঁসে উঠেছে মানুষ

বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের রাতাখোর্দ্দ গ্রামে বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ ও সামগ্রী সরবরাহে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে নির্মাণসামগ্রী সরবরাহে সংশ্লিষ্টদের ওপর হামলা ও দফায় দফায় হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় লোকজন।

সাধনপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. ওয়াহিদ জানান, বেড়িবাঁধ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে গ্রামের কয়েক শ পরিবার নদীভাঙন, জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা ও কয়েক হাজার একর ফসলি জমি রেহাই পাবে। কিন্তু নদীভাঙন প্রকল্পের কাজে অন্য এলাকা থেকে আসা কিছু যুবক তাদের কাছ থেকে বালু ও পাথর নেওয়ার দাবি জানিয়ে প্রকল্পকাজে বাধার সৃষ্টি করছে।

রাতাখোর্দ্দ গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়েজ আহম্মেদ বলেন, ‘শঙ্খ নদে আমাদের শত শত ঘরবাড়ি ও ফসলের জমি বিলীন হয়ে গেছে। অনেক দিন পরে হলেও আমাদের এলাকায় বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী এসে কাজে বাধা দিচ্ছে। গ্রামবাসীদের নিয়ে তাদের প্রতিহত করেছি। আমাদের গ্রামবাসীর লক্ষ্য মানসম্মত কাজ। মানসম্মত কাজ হলে আমাদের বেড়িবাঁধ দীর্ঘমেয়াদে কাজে আসবে। ’

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, সাধনপুর ইউনিয়নের বঙ্গোপসাগরের শঙ্খ নদের মোহনায় অবস্থিত উপকূলীয় গ্রাম রাতাখোর্দ্দ। অবহেলিত গ্রামটিতে বেড়িবাঁধ না থাকায় আগেই নদের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বৈলগাঁও এবং খোর্দ্দ মোজাফফরাবাদ নামে দুটি গ্রাম। বিলীন হওয়ার পথে রাতাখোর্দ্দও। এরই মধ্যে শত শত পরিবার হারিয়েছে পৈতৃকভিটা, কৃষিজমি। প্রতি বছর ভাঙনের কারণে ঘরবাড়ি হারাচ্ছে অসংখ্য পরিবার। বেড়িবাঁধ না থাকায় বছর বছর জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায় গ্রামের বেশির ভাগ ঘরবাড়ি। গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দূর করতে সেখানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ, জিও ব্যাগ ও ব্লক স্থাপনে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। কাজ করছে প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (পিডিএল) এবং হাসান ব্রাদার্স নামে দুটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এ নির্মাণকাজে লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে আফজাল নামে এক ছাত্রনেতার। এ নেতার নির্দেশে বিএনপির স্থানীয় কথিত নেতা নুরুল আলম, জিয়া উদ্দীন, আহম্মেদ আলী, ফোরকান ও শওকত বাঁধ প্রকল্প কাজে নির্মাণসামগ্রী সরবরাহের দাবি জানিয়ে বেড়িবাঁধের কাজে বাধা দিচ্ছেন।

এলাকাবাসীর দাবি, বেড়িবাঁধ নির্মাণে বাধা প্রদানকারী স্থানীয় নেতাদের সবাই দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম পাপ্পার অনুসারী। অভিযোগের বিষয়ে পাপ্পা বলেন, ‘মাস দেড়েক আগে কিছু ছেলে বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প এলাকায় গিয়ে আমার কর্মী পরিচয় দিয়ে প্রকল্প কাজের নির্মাণসামগ্রী তাদের কাছ থেকে সরবরাহ নেওয়ার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানায় বলে শুনেছি। ’

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার লিটন হোসেন বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের পর বেড়িবাঁধের কাজে আমাদের বাধা দিয়েছিল। এক শুক্রবার জুমার নামাজের পর ৫০-৬০ জন লোক এসে তাদের কাছ থেকে সরবরাহ নিতে চাপ দিয়েছিল। তবে গ্রামবাসী ধাওয়া দিলে তারা চলে যায়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসেছিল। ’

সৌজন্যে বাংলাদেশ প্রতিদিন

এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।