ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দোকান প্রতি রেজিস্ট্রেশন ৫ হাজার, উদ্যোক্তাদের অসন্তোষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
দোকান প্রতি রেজিস্ট্রেশন ৫ হাজার, উদ্যোক্তাদের অসন্তোষ

ঢাকা: রাজধানীর আগারগাঁওয়েও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)-ঐক্য হলিডে মার্কেটে দোকান বসে সপ্তাহে দুদিন। দোকানিদের এ সময়ের জন্য রেজিস্ট্রেশন বাবদ খরচ হয় পাঁচ হাজার টাকা।

মাত্র ২০ ঘণ্টার জন্য দোকান বসাতে এত অর্থ নির্ধারণে অসন্তোষ দেখা গেছে উদ্যোক্তাদের মধ্যে।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আগারগাঁওয়ের ডিএনসিসি-ঐক্য হলিডে মার্কেটে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অসন্তোষ সম্পর্কে জানা যায়।

ডিএনসিসি-ঐক্য ফাউন্ডেশনের যৌথ ব্যবস্থাপনায় চালু হলিডে মার্কেট পাইলট প্রকল্প হিসেবে সাপ্তাহিক দুই ছুটি শুক্র ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। নির্বাচন ভবনের সামনে থেকে সংগীত কলেজের মোড় পর্যন্ত সড়কের দুই ধারে ব্যারিকেড দিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম পাশে একশটি স্টলের জন্য স্থান বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি মার্কেটের উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।  

মার্কেট ঘুরে চামড়া ও পাটজাত বিভিন্ন পণ্য, পোশাক ও হস্তশিল্প, কৃষি ও খাদ্য পণ্য, নার্সারি, বিভিন্ন খাবারের দোকান, নানা ধরনের পিঠার স্টলসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসতে দেখা যায় উদ্যোক্তাদের। সকালের দিকে তেমন ভিড় না থাকলেও বিকেলের দিকে মার্কেটে দর্শনার্থী এবং ক্রেতাদের ব্যাপক সমাগম লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে আসেন। তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কিনতে দেখা যায়। খাবার দোকানগুলোয় মানুষের ভিড় থাকে বেশি। এছাড়া সন্ধ্যার পর আগতদের জন্য বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়।

কিন্তু দোকানের জায়গা বরাদ্দে ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, বিষয়টি নিয়ে নাখোশ উদ্যোক্তারা। তাদের কাছে এ অর্থ অতিরিক্ত বলে মনে হচ্ছে।

বিভিন্ন পণ্য নিয়ে হলিডে মার্কেটে স্টল নেওয়া এক উদ্যোক্তা বাংলানিউজকে বলেন, দুদিনের জন্য পাঁচ হাজার টাকা আমাদের মতো ছোট উদ্যোক্তাদের জন্যে অনেক বেশি। বেচা-কেনা যা হয়, তার মধ্যে খরচও কম নয়। পণ্য আনা নেওয়া করতে পরিবহন খরচ, সারাদিনের খাবার খরচ। এসব বাদ দিয়ে লোভ করা অত্যন্ত কঠিন।

তবুর সরকারের এমন উদ্যোগে তিনি খুশি। তবে, দোকানের জায়গা বরাদ্দে পাঁচের বদলে তিন হাজার টাকা করা হলে বেশি খুশি হবেন তিনি।

লুঙ্গি গামছা ও বিভিন্ন ধরনের কাপড় নিয়ে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থেকে আসা এক ব্যবসায়ী বলেন, হলিডে মার্কেটে জায়গা বরাদ্দে অর্থ বেশি খরচ হয়, তা সত্য। তবে যদি কমানো হয়, আমাদের মতো প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের জন্য ভালো হবে। তাছাড়া প্রচার প্রচারণা আরও বাড়ালে ব্যবসাও ভালো হবে। বেচাকেনা বাড়লে কিছু লাভ করা যাবে।

এ দুজনের চেয়েও ভাড়া কম চান ফরিদপুর নার্সারির এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, যাতায়াত, পণ্য পরিবহন, চা-নাস্তা, দুপুর-রাতের খাবার ও স্টল খরচে প্রচুর অর্থ চলে যাচ্ছে। প্রতিদিনের জন্য ১ হাজার টাকা ভাড়া হলে ভালো হতো।

অনেকে বেচাকেনার চেয়ে নিজের ব্যবসার প্রচারণার জন্য হলিডে মার্কেটে আসেন বলে জানিয়েছে। আবার কেউ কেউ দুই দিনের জন্য রেজিস্ট্রেশন বাবদ ৫ হাজার টাকা নির্ধারিত করা অযৌক্তিক বলে জানিয়েছেন। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিষয়টি বিবেচনা করে রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোরও দাবি করেছেন তারা।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মো. সেলিম রেজা বাংলানিউজকে বলেন, আগারগাঁওয়েও ডিএনসিসি-ঐক্য হলিডে মার্কেটটি মূলত পাইলট প্রজেক্ট। এ প্রকল্পে থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা অন্যান্য ওয়ার্ডেও শুরু করা যায় কিনা, সেটি পর্যবেক্ষণ করছি। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটাকে সার্বজনীন করার চেষ্টা করা হবে।

রেজিস্ট্রেশন ফির ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, তিন মাসের এ পাইলট প্রজেক্ট থেকে আমরা খুঁটিনাটি বিষয় দেখে সিদ্ধান্ত নেব। এতে কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি আছে, আমরা সেগুলোর তালিকা করছি। পরবর্তীতে কীভাবে এটাকে কমানো যায়, সেটাও আমরা দেখছি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
আরকেআর/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।