ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দেশদ্রোহী কিছু করিনি, স্বেচ্ছায় অব্যাহতি চেয়েছিলাম: ‘মানবিক পুলিশ’ শওকত

নিউজ ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২৩
দেশদ্রোহী কিছু করিনি, স্বেচ্ছায় অব্যাহতি চেয়েছিলাম: ‘মানবিক পুলিশ’ শওকত

চাকরি হারিয়েছেন ‘মানবিক পুলিশ’ খ্যাত চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কনস্টেবল শওকত হোসেন। বৃহস্পতিবার খবরটি গণমাধ্যমে এলে অনেকে হতাশ হন।

সমালোচনা শুরু হয় চারিদিকে।

কেউ কেউ বিষয়টির গভীরে না গিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে দোষী করে ফেসবুকে পোস্টও দেন।

এমন পরিস্থিতিতে চাকরিচ্যুত কেন হলেন সে বিষয়টি পরিষ্কার করলেন শওকত হোসেন নিজেই।  

এ বিষয়ে জানাতে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) ফেসবুকে লাইভে আসেন তিনি। জানান, দেশদ্রোহী কোনো কাজ করে চাকরিচ্যুত হননি তিনি। নিজেই অব্যাহতি চেয়েছিলেন। তবে গরহাজিরের কারণ দেখিয়ে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তাই পুলিশকে নিয়ে বিতর্ক না ছড়ানোর জন্যও আহ্বান জানান তিনি।

লাইভে  শওকত হোসেন বলেন, ‘আমি স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যহতির আবেদন করেছিলাম। কুমিল্লায় পুলিশ সুপার মহোদয়ের কার্যালয়ে গিয়েও অব্যাহতির আবেদন করি। এর প্রক্রিয়া শেষ হতে অনেক সময় লাগে। কিছু সময় দেরি হয়ে গেছে। ওই সময়টাতেই আসলে অব্যহতির নোটিশটা চলে আসে। আসলে দেশদ্রোহী কোনো কিছুই আমি করিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘গতানুগতিক নিয়মেই আমি দরখাস্ত করেছি। এটি নিয়ে ভিন্ন ধরনের কথা বলার সুযোগ নেই। আমার অব্যাহতির বিষয়টা গরহাজিরের কারণেই তারা করেছে। আমার ব্যক্তিগত অভিমত যে- বিষয়টা আরো একটু সুন্দর হতে পারতো। আমরা যেভাবে বিদায় নেই; সেভাবেও হতে পারতো। হয়তো অফিসিয়াল জটিলতার কারণে সেটা হয়নি। তারপরও যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে- আমি সে সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। ’ 

গরহাজিরের বিষয়টি নিয়ে শওকত বলেন, ‘আমি গরহাজির ছিলাম। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে আমি বসে থাকেনি। আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলাম। মনবিক কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছি। আমি তখন ঘুমাই নাই, বিদেশে গিয়ে ঘুরিও নাই। ’

চাকরি না করলেও বাংলাদেশ পুলিশকে আজীবন ভালোবেসে যাবেন বলে জানান শওকত।

সদ্য সাবেক পুলিশ সদস্য বলেন, আমি নিজেকে বাংলাদেশ পুলিশের একজন গর্বিত সদস্য মনে করি। পুলিশ বাহিনীর মতো একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীতে আমি কাজ করে আসছিলাম দীর্ঘ ১৮ বছর। বর্ণাঢ্য এই জীবনে আমি পুলিশ থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। এই জন্য আমি আজীবন কৃতজ্ঞ। যতো দিন বেঁচে থাকব শ্রদ্ধার জায়গা থেকে বাংলাদেশ পুলিশকে স্মরণ করব। ’ 

মানবিক কাজ নিয়তিম চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন শওকত। তিনি বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে মানবিক কাজের সঙ্গে জড়িত। এই পথ চলার পরিসর অনেক বড় হয়েছে। আমার পাশে এখন অনেক মানুষ কাজ করে। এই কাজ আমি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। আন্তর্জাতিকভাবে মানুষ আমাদের মানবিক মানুষ হিসেবে জানুক। আমরা এটিই চাই। বাংলাদেশকে মানবিক কান্ট্রি হিসেবে যেন অন্যান্য দেশ শনাক্ত করে- আমাদের ভিশন এটাই। ’ 

গত ১৬ এপ্রিল শওকত হোসেনের চাকরিচ্যুতির আদেশে স্বাক্ষর করেন সিএমপির বন্দর বিভাগের উপ-কমিশনার শাকিলা সোলতানা।

আদেশে বলা হয়েছে, ‘৭১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত (শওকত হোসেন) শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় এবং বেওয়ারিশ মানুষ নিয়ে মানবিক কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব নয়, এমন বক্তব্য লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে’।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।