ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সড়ক সংস্কারে বরাদ্দ ৩ টন চাল, কাজ হয়েছে মাত্র ৬ হাজার টাকার!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৩
সড়ক সংস্কারে বরাদ্দ ৩ টন চাল, কাজ হয়েছে মাত্র ৬ হাজার টাকার!

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার এক কিলোমিটার একটি সড়ক সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তিন টন চাল, যার বাজার মূল্য লাখ টাকার বেশি। কিন্তু সড়কটিতে সংস্কারের কাজ হয়েছে মাত্র ৩০০ মিটার, এতে ব্যয় হয়েছে মাত্র ছয় হাজার টাকা।

 

বরাদ্দের সিংহভাগ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্পের সভাপতি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।  

তিনি উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও ওই ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি।  

এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের চরবসু এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল মতলব হাওলাদার পাড়া সড়ক সংস্কারের (চরবসু বাজারের দক্ষিণে পাকা রাস্তা থেকে আবুল কালামের বাড়ি পর্যন্ত) জন্য তিন টন চাল বরাদ্দ দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আবদুল মান্নান। ২০২২-২৩ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাজে ‘কাজের বিনিময়ে খাদ্য’ (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক এ বরাদ্দ দেওয়া হয়।  

প্রকল্পটির সভাপতি ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন সম্প্রতি সড়কটির প্রায় এক কিলোমিটার অংশের মধ্যে মাত্র ৩০০ মিটার অংশে মাটি ফেলে সংস্কার করিয়ে দেন। ফলে ভাঙাচোরা সড়কে কষ্ট করে চলতে হয় লোকজনকে।

এ ব্যাপারে প্রকল্পের সভাপতি ও ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন জানান, মাটি কাটার শুরুতে স্থানীয়রা বাধা দেন। যে কারণে কাজটি শেষ করতে না পেরে এ বরাদ্দ নিয়ে অন্য একটি রাস্তার কিছু কাজ করা হয়েছে।

যদিও স্থানীয় আবুল কাশেম, নুর নবী, ছালাহ উদ্দিনসহ স্থানীয় কয়েকজন জানান, সড়কটির কাজে বাধা দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। ইউপি সদস্য জসিমের দাবিটি সত্য নয়। এখানে অনিয়ম করা হয়েছে। নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটি পানিতে তলিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

তারা আরও জানান, জসিম উদ্দিন মাত্র ছয় হাজার টাকায় ভেকু যন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে সড়কের ৩০০ মিটার অংশে মাটি ফেলেছেন। অথচ এ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হওয়া তিন টন চালের বাজারমূল্য প্রায় এক লাখ টাকা।  

তাদের অভিযোগ, প্রকল্প সভাপতি সড়কটির বাকি অংশের কাজ না করে পিআইওকে ম্যানেজ করে পুরো টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) পরিতোষ কুমার বিশ্বাস জানান, প্রকল্পটি সম্পর্কে তিনি জানেন না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, এক সড়কের নামে দেওয়া বরাদ্দে অন্য সড়কে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। অনিয়মের অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।