ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জেলা প্রশাসকের কর্মচারীর নামে স্ত্রীর মামলা আমলে নেয়নি পুলিশ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৩
জেলা প্রশাসকের কর্মচারীর নামে স্ত্রীর মামলা আমলে নেয়নি পুলিশ!

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আইসিটি বিভাগে কর্মরত অফিস সহায়ক বাইতুল ওরফে আজিমের নামে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন তার স্ত্রী।  

মামলায় স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনেন বাইতুলের স্ত্রী সোনিয়া বেগম।

এরপর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে সেই মামলা আমলে নেয়নি পুলিশ। মামলাটি এখনও রেকর্ড করা হয়নি।  

তবে সদর মডেল থানার ওসি মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, মামলাটি আমলে না নেওয়ার তথ্য সঠিক নয়। মামলাটি তদন্তনাধীন রয়েছে এবং দ্রুত রেকর্ড করা হবে।

সোনিয়া বেগমের মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাইতুল ওরফে আজিম তার স্ত্রী সোনিয়া বেগমকে নানান অজুহাতে মারধর করতেন। সেই সঙ্গে তার নামে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সেগুলো আর পরিশোধ করেননি স্বামী বাইতুল। মারধরের এক পর্যায়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন সোনিয়া। এমন পরিস্থিতিতে গত ২৩ মে সোনিয়াকে তালাক দেন বাইতুল। এ ঘটনায় গত ৭ জুন বিজ্ঞ আমলি আদালতে সোনিয়া একটি মামলা দায়ের করলে বাইতুল ফের সোনিয়াকে কৌশলে বিয়ে করে মামলা থেকে অব্যাহতি পায়। কিন্তু মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে আবারও সোনিয়ার ওপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করেন।  

অভিযোগে আরও বলা হয়, গত কয়েকদিন আগে সোনিয়া বেগম জ্বরে আক্রান্ত হন। এই সুযোগে জ্বরের ওষুধ বলে সোনিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে ১০টি ঘুমের ওষুধ জোর করে খাওয়ান বাইতুল। এতে সোনিয়া অচেতন হয়ে পড়লে তাকে বস্তায় ভরে পৌর এলাকার হরিপুর নামক স্থানে রাস্তার ধারে ফেলে আসেন তিনি। পরে গত ১৩ আগস্ট স্থানীয় এক নারী সোনিয়াকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে তার বাড়ি নিয়ে যায় এবং সোনিয়ার পরিবারকে বিষয়টি জানানো হলে তার ভাই আরিফ পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। তিন দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বর্তমানে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন সোনিয়া।  

এ ঘটনার পর পুলিশ বেশ তৎপর হলেও পরে অজ্ঞাত কারণে মামলাটি রেকর্ড করা হয়নি বলে অভিযোগ সোনিয়া বেগমের।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বাইতুল আজিমের সঙ্গে কথা বলতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, বাইতুল সোমবার সকালে শিবগঞ্জে যোগদানের পর দুপুরে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। পরে তার মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নির্যাতনের বিষয় জানিয়ে এবং এর প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছেও আবেদন করেন সোনিয়া।

নিজ কার্যালয়ের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে ওঠা নারী নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাববুব-উল-ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি এবং অভিযুক্তকে শিবগঞ্জ উপজেলায় বদলি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।