ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গৌহাটি-সিলেট-ঢাকা বিমান চলাচলের প্রস্তাব পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৩
গৌহাটি-সিলেট-ঢাকা বিমান চলাচলের প্রস্তাব পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন

সিলেট: গৌহাটি-সিলট-ঢাকা বিমান চলাচলের জন্য বিমান মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।  

তিনি বলেন, মাঝখানে বিমান মন্ত্রণালয় গৌহাটি টু ঢাকা চালুর কথা বলেছিল।

আমরা দেখলাম গৌহাটি-সিলেট-ঢাকা হলে অর্থৈনতিকভাবে আরও কার্যকর হবে। এই পর্যায়েই আছে। আর সিলেটের এয়ারপোর্ট এখনও কাজ চলমান রয়েছে। এটি এরই মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কাজ ধীর গতিতে চলছে।  

শুক্রবার (০৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশীপ ডায়ালগ ১১ তম রাউন্ডের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।  

সিলেট শিলচর বাস সার্ভিসের বিষয়ে তিনি বলেন, একসময় সিলেট শিলচর বাস সার্ভিস ছিল, আমি সেই প্রস্তাবটাও এখন দিয়েছি। এটি বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। সুতারকান্দি দিয়ে ভারতের সঙ্গে ব্যবসা হচ্ছে। এটি আরও বাড়বে। আমাদের সম্পর্কের কারণে ভারত অনেকগুলো প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।  

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দু'দিনের অনুষ্ঠানে আমরা আলোচনা করেছি, যে পথে চলছি, সেটি বিচার করি ঠিক আছে কিনা। সৃজনশীল আর কি করা যায়। এই ডায়লগগুলো আমাদের জন্য খুব উপকারী। যাতে উভয় দেশ একে অপরকে বুঝার সুযোগ পায়।  

পররাষ্ট্রমন্ত্রী  সিলেটের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ধীর নিয়ে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করে বলেন, সিলেটের প্রায় প্রকল্প ধীর গতি চলছে। এগুলো যেন দ্রুত শুরু হয়, এজন্য সাংবাদিকদেরও নজরে আনতে বলেন। ছয় লেন প্রকল্পও শুরু হয়নি। অথচ ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ  এরইমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে।  এটি আমাদের সমস্যা। বিশেষ করে আমাদের স্বদেশি প্রকৌশলী, ঠিকাদাররা কি কারণে দেরি করে জানি না। হয়তো টাকা পয়সা বাড়াতে দেরি করেন। বিদেশিরা সময়ের আগে কাজ শেষ করে ফেলে।  

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমি সংসদের প্রস্তাব দিয়েছি,  দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রকল্প বিলম্ব হতো। তখন প্রেসিডেন্ট আইন করলেন, প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শেষ না করলে, সুনির্দিষ্ট কারণ দেখাতে না পারলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে চাকরিচ্যুত, ঠিকাদারকে জেলও দেওয়া  হয়। আমাদের দেশেও সেই আইন করা উচিত।

এরআগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোমেন বলেন,  ভারতের আসাম ও শিলংয়ের সঙ্গে আমরা নিয়মিত সম্পর্কে জড়িয়ে আছি। আমাদের প্রয়োজন উন্নয়ন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেন। আমি গতকাল বলেছিলাম, বাংলাদেশের অধিকাংশ পর্যটক ও চিকিৎসার জন্য ভারতে ভ্রমন করেছেন। এর মধ্য দিয়ে ভারত রেমিট্যান্স পেয়েছে। শিলচরে ফ্যাস্টিবলের মাধ্যমে উভয় দেশের সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বরাক ভ্যালির মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম আরও বাড়বে। সিলেট-শিলচর বাস সার্ভিস রেগুলার বাস সার্ভিস চালুর জন্য গত বছর আলোচনা হয়েছে।  

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ভারতের রাজ্য পররাষ্ট্র ও শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী ড. রাজকুমার রঞ্জন সিং বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সোনালী অধ্যায় রয়েছে।  বিশেষ করে নেপালের সঙ্গে ভারতের গ্রীড লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরহ সুবিধার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সাসটেইনেবল ইউজার রিসোর্সেস। ভারত থেকে সোস্যাল ইকোনোমিক্যালি বাংলাদেশ লাভবান হবে।  

তিনি আরও বলেন, জি-২০ সম্মেলনের  মাধ্যমে বাংলাদেশ লাভবান হয়েছে।  রেল, রোড, পানি ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ রয়েছে। আগরতলার সঙ্গে রেললিংক সংযোগ হবে। মোংলা সমুদ্র বন্দর সুবিধার মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও লাভবান হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেম্বার অব গভার্মেন্ট কাউন্সিল শ্রী সুরেয়া দোভাল বলেন, বাংলাদেশ -ভারতের কালচারার ও পলিটিক্যাল ইতিহাসের মিল রয়েছে। তদ্রুপ সব ক্ষেত্রে ঐক্য রয়েছে।  

ভারত পার্লামেন্টের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ভিনসেন পালা বলেন, বাংলাদেশের সিলেট ও ভারতের শিলংয়ের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে ব্যবসার ক্ষেত্রে এই দুটি স্থানের ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা আদান-প্রদান করে থাকেন। যে কারণে আমাদের দুই দেশের মধ্যে টেকনোলজি শেয়ার করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। তাছাড়া চিকিৎসা ক্ষেত্রেও বাংলাদেশিদের আসা যাওযার ক্ষেত্রে ভিসার প্রয়োজনীতা আরও সহজীকরণ এখন সময়ের দাবি। এ ধরণের ডায়লগের মাধ্যমে এসব গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে।  

ভারতের সাবেক সংসদ সদস্য স্বপন দাস গুপ্ত বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক দীর্ঘ সময়ের। এই সম্পর্কটা গুরুত্বপূর্ণ।  এরআগে শিলচর কাছাড়ের ডায়লগটাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ।  

আরো বক্তব্য রাখেন ভারতের সংসদ সদস্য ও ত্রিপুরার ডেপুটি স্পিকার রাম প্রসাদ পালা।  
 
সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বাংলাদেশের ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ও বাংলাদেশের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ।  

বাংলাদেশ সময়: ২২১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২৩
এনইউ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।