ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গাবতলী থেকে ছাড়ছে না দূরপাল্লার বাস, কাউন্টারে চলছে লুডু খেলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২৩
গাবতলী থেকে ছাড়ছে না দূরপাল্লার বাস, কাউন্টারে চলছে লুডু খেলা

ঢাকা: বিএনপি-জামাতের দু’দিনের অবরোধে গাবতলী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। তেল পাম্প ফাঁকা জায়গায় গাড়ি পার্ক করে রাখা হয়েছে।

অলস সময় কাটছে ড্রাইভার, হেলপার, কলার বয়সহ হকারদের। যে কয়টি কাউন্টার খোলা রয়েছে তাতে ভেতরে লুডু খেলে সময় পার করছেন তারা।

রোববার (৫ নভেম্বর) গাবতলী বাস টার্মিনালে খোঁজ নিয়ে জানা যায় সকাল ৯টা পর্যন্ত দূরপাল্লার কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি। অধিকাংশ কাউন্টার বন্ধ। কোনো যাত্রীও নেই। দুয়েকটি  কাউন্টার খোলা থাকলেও বাস ছাড়ার সম্ভাবনা কম।  

তারা জানালেন, যাত্রী পেলে এবং সন্ধ্যায় দুয়েকটি গাড়ি ছাড়তে পারে। তারপরও নিশ্চয়তা নেই।

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাধারণত ঢাকা এক্সপ্রেসের তিনটি বাস ঢাকা- উত্তরাঞ্চলে চলাচল করে। অবরোধ কারণে কোনো গাড়িই ছাড়ছে না।  

গাবতলীতে বাসটির কাউন্টার ম্যানেজার আল আমিন বললেন, অবরোধের কারণে বাস ছাড়ছি না, কোনো যাত্রীও আসছে না। আগের হিসাব নিকাশ করার জন্য কাউন্টার খুলে বসে আছি। হিসাব করছি, আরও কিছু কাজ আছে শেষ করে চলে যাব। আশপাশের ১৮টি কাউন্টারের মধ্যে খোলা মাত্র তিনটি।  

অন্যদিন কাউন্টার সরগরম থাকে। যাত্রী, হকার, কলার বয়, গাড়ির মানুষে গিজগিজ করে। চিরচেনা গাবতলী টার্মিনাল যেন অচেনা জায়গাতে পরিণত হয়েছে। কাজ নেই,  একাধিক কাউন্টারের লোকজন মাঝখানের যাত্রীর বসার ফাঁকা জায়গাতে বসে লুডু খেলছে। কেউ কেউ র‌্যাকেট খেলছে।

গাবতলীর কাউন্টার মাস্টার মো. সজিব হোসন বললেন, লোকজন নেই, বসে আছি; দেখছেন না তিন-চার কাউন্টারের লোকজন মিলে গেম খেলছে। অফিসের অর্ডার তাই আমি কাউন্টারে এসে বসে আছি।  

দুয়েকটি বাস ছাড়ার নির্দেশ আছে সেঁজুতি ট্রাভেলসের মালিকের। কল্যাণপুরের কাউন্টার খুলে বসে আছে লোক নেই, স্বাভাবিকের চেয়ে দুই তিনশ টাকা কম দাম টিকিট বিক্রি করতে চাইলেও চট্টগ্রামের কোনো যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না।  

আমিনুল ইসলাম নামে একজন যাত্রী চট্টগ্রামে যাবে, কাউন্টারের মাস্টারের কাছে নিরাপত্তার ব্যাপারে জানতে চাইলে জানালো হলো কোন সমস্যা নেই। আগের অবরোধে বাস গেছে কোনো সমস্যা হয়নি।

আরিফুর রহমান লালবাগ থাকেন, যাবেন কুষ্টিয়া। কোনো বাস যাচ্ছে না। একটি বাস যাবে, তাও সন্ধ্যায়। এতক্ষণ বসে না থাকে তিনি বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।  

মালিক সমিতির অফিস থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানান, স্বাভাবিক থাকলে প্রায় ১৩শ বাস গাবতলী ছেড়ে যায়। হরতাল-অবরোধের কারণে দেড়শ’-দুইশ’তে নামে। আজ ভোরে কয়েকটি বাস ছেড়েছে, কিছু বাস সন্ধ্যার দিকে ছাড়বে।

তিনি আরও জানান, মালিক সমিতি-শ্রমিক ইউনিয়ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে অবরোধে গাড়ি চলবে। কিন্তু কেউ ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি রাস্তায় নামাতে চাইছেন না, তাছাড়া যাত্রীও কম। হরতাল, অবরোধের মধ্যেও যারা গাড়ি নামিয়েছেন তারা তুলনামূলক পুরাতন গাড়ি চালাচ্ছেন। দামি ও নতুন গাড়ি চালাচ্ছেন না কেউ।

অবরোধের কারণে গাবতলীর কাউন্টারকেন্দ্রিক ক্ষুদ্র ব্যবসাতেও প্রভাব পড়েছে।  যাত্রী নেই, কেনাবেচা নেই,  অলস বসে আছে খাবার দোকান, ফল বিক্রেতারা।  

গাবতলী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে না গেলেও সাভার ও পাটুয়ায় ফেরিঘাটে কিছু কিছু গাড়ি ছেড় যাচ্ছে। এ নিয়ে সতর্ক অবস্থানে আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ ও পরিবহন শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২৩
জেডএ/এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।