ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘বাসের চাকা ঘুরলে টাকা পাই, নইলে পাই না’ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২৩
‘বাসের চাকা ঘুরলে টাকা পাই, নইলে পাই না’ 

ঢাকা: সরকার পতনের দাবিতে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দ্বিতীয় দফার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সড়কে গণপরিবহন থাকলেও যাত্রী ছিল কম।  

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়কে অনেক পরিবহন আছে কিন্তু যাত্রী নেই।

মানুষজন ভয়ে বাসা থেকে প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন না। আমরা পরিবহন শ্রমিকরা দিন আনি দিন খাই। বাসের চাকা ঘুরলে টাকা পাই। নাইলে পাই না।  

সোমবার (৬ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর এলাকায় পরিবহন শ্রমিকেরা এসব কথা বলেন।

হরতাল- অবরোধে পরিবহন শ্রমিকদের দিনকাল কীভাবে যাচ্ছে জানতে চাইলে বসুমতি পরিবহনের চালক মো. সোহেল বলেন, অবরোধের আগে আবদুল্লাহপুর ও গাজীপুর রুটে বাস চলত প্রায় ৪০০। হরতাল-অবরোধ এই রুটে পরিবহন চলছে মাত্র ১৫০ থেকে ২০০টি। গত শনিবার সর্বশেষ বাস চালিয়েছিলাম। আজকে বাস নিয়ে সড়কে নামার কথা ছিল আমার। গতকাল অবরোধে আমার বাসটি ভাঙচুর হয়। এ কারণে আজ বাসটি সড়কে নামায়নি মালিক। বিরোধী দলের এই আন্দোলনের কারণে বসে থাকতে হচ্ছে আমার। বাস সড়কে না নামা পর্যন্ত আমাকে ধারদেনা করে চলতে হবে।  

রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে এই বাসচালক বলেন, বাসের মধ্যে চারটি করে গজারি রাখতে বলেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আন্দোলনকারীরা যখন ককটেল, বোমা মারবে তখন কি করব আমরা ? 

পরিস্থান পরিবহনের হেলপার মো. ইব্রাহিম বলেন, গতকাল (রোববার) অবরোধ শুরু হয় সড়কে বাস নামায়নি মালিক। তাই আজকেও ডিউটি করতে বাসে উঠিনি। আমার আয় রোজগার বন্ধ। পরিবারের অন্য সদস্যরা বলছে, হরতাল-অবরোধে ডিউটি করতে না। তাই ডিউটি করছি না।  

সেফটি পরিবহনের হেলপার মো. সালাউদ্দিন বলেন, সড়কের যাত্রী অনেক কম। মানুষজন ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছে না। আমরা পরিবহন শ্রমিকরা দিন আনি দিন খাই। মানে হচ্ছে বাসের চাকা ঘুরলে টাকা পাই। নইলে পাই না। পরিবহনের ডিউটি করা ছাড়া আমাদের তো আর চলার কোনো উপায় নাই। মনে হয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আমাদের এই অভাব অনটনের মধ্যেই চলতে হবে।  

পল্লবীর বাসিন্দা মো. হুমায়ুন কবির ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির জামায়েত কি অবরোধ দিয়েছে? তারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে সড়কে থাকে না। অবরোধের মধ্যে সড়ক পার হতেও পাঁচ মিনিট সময় লাগে এ কেমন অবরোধ। সড়কে গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা অনেক বেশি আজকে (সোমবার) দেখেছি। কিন্তু এই অবরোধে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও টহলে রয়েছেন। রাজধানীসহ সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২২৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার দ্বিতীয় দফার অবরোধকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত থেকে রোববার রাত ১১টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৯টি গাড়িতে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২৩
এমএমআই/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।