ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মোবাইল-সরঞ্জামাদি: ফেনীতে দৈনিক কোটি টাকার বেচাকেনা

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৪
মোবাইল-সরঞ্জামাদি: ফেনীতে দৈনিক কোটি টাকার বেচাকেনা

ফেনী: ফোন, ফ্যাক্স, টেলিগ্রামের দিন পার হয়েছে। এখন মানুষের নিত্য অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে মোবাইল।

শরীরের সঙ্গে অনেকটা আত্মার মতো মিশে আছে যন্ত্রটি। ফলশ্রুতিতে বিস্ময়করভাবে বাড়ছে এর বাজার। অগ্রসরমান জনপদ ফেনীতেই মোবাইল ও এর যন্ত্রাংশের বাজার ছড়িয়েছে প্রতিদিন এক কোটি টাকারও বেশি। জেলায় এ খাতে কর্মসংস্থান হয়েছে দেড় হাজারের অধিক মানুষের।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল এলাকায় মোবাইল ও এর যন্ত্রাংশের জন্য বিশেষায়িত বিপণি বিতান ‘মহিপাল প্লাজা’। সেখানে চারটি ফ্লোরে ছোট-বড় মিলিয়ে আছে দেড় শতাধিক মোবাইল, এর যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামের দোকান। আছে নামি-দামি ব্র্যান্ডের শো-রুম। এ বিপণি বিতানটিতে নানাভাবে কর্মরত আছেন ৫ শতাধিক মানুষ।

শুধু এ একটি বিপণি বিতান নয়, শহরের গ্র্যান্ড হক টাওয়ার, রাবি শপিং সেন্টান ও স্টেশন রোড এলাকায় রয়েছে মোবাইলের জন্য আরও কয়েকটি বিশেষায়িত বিপণি বিতান। এসব বিপণি বিতানের শতাধিক দোকানে শুধু মোবাইল ও এর যন্ত্রাংশ এবং সরঞ্জাম বিক্রি হয়। এছাড়াও শহরের অন্যান্য অলিগলি ও বাকি পাঁচ উপজেলায় রয়েছে আরও দুই শতাধিক মোবাইল ও সরঞ্জামাদির দোকান।

প্রতিটি দোকানের মালিক, বিক্রয় কর্মকর্তা ও টেকনেশিয়ান মিলিয়ে কমপক্ষে তিনজন করে হলেও জেলার ৫ শতাধিক দোকানে দেড় হাজার মানুষ কর্মরত।

ব্যবসায়ীদের আনুমানিক হিসেব মতে ছোট-বড় দোকানগুলোর প্রতিটিতে দৈনিক কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা করে বিক্রি হলেও পুরো জেলার ৫০০ দোকানে বিক্রির এ হিসেব দাঁড়ায় এক কোটি টাকায়। বিশেষ কিছু দিনে বিক্রির এ পরিমাণ আরও বেড়ে যায়।

এ বাজারে মাসে লেনদেন দাঁড়ায় ২৫ কোটির বেশি। মোবাইলের বিশাল এই বাজার দেশের রাজস্ব আয় ও বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানে রেখেছে বিশাল ভূমিকা।

ফরহাদ নামের এক বিক্রেতা জানান, এই বাজারে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। বিক্রয়কর্মী থেকে মোবাইল মেরামতকারী এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনাকারী। বিভিন্ন ধরনের জনবলের দরকার পড়ে এ বাজারে।

সম্প্রসারিত বাজার হওয়ায় দেখে-শুনে ন্যায্য দামে নিজেদের পছন্দের পণ্যটি কিনা যায় বলে মনে করছেন ক্রেতারা। মোবাইল কিনতে যাওয়া ফারহানা আবেদীন নামে এক ক্রেতা বলেন, এ বাজার থেকে অনেকগুলো দোকান দেখেশুনে ভালোটা কিনতে পারছি।

নতুন অফিসিয়াল ফোনের পাশাপাশি সেখানে মেলে ব্যবহৃত, আনঅফিশিয়াল ফোনের বিশাল বাজার। এখানেও প্রতি মাসে বেচা-কেনা কোটি ছাড়িয়ে। তবে এসব ফোন কেনার সময় বাড়তি সতর্কতার কথা জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল, ফেনী) থোয়াই অং প্রু মারমা বলেন, এ ধরনের ফোন কিনতে হলে অবশ্যই ইএমআই নম্বরটি দেখে এবং নিকটস্থ থানায় জানিয়ে কেনা উচিত।

ক্রমবর্ধমান বিশাল এ বাজারে সম্ভাবনার অনেক গল্প থাকলেও কিছু সংকটের কথাও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফেনী মহিপাল প্লাজার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন বলেন, আনঅফিসিয়াল ফোনগুলো বিকি-কিনির বিষয়ে যদি প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তাহলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করে স্বস্তি পাবেন।

বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও জেলার সামগ্রিক অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা এ খাতকে আরও এগিয়ে নিতে প্রয়োজন সময়োপযোগী পদক্ষেপ- এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২৪
এসএইচডি/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।