ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১৭ বছরে ‘বুড়িয়ে যাওয়া’ শিশু নিতু মারা গেছে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৯ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৪
১৭ বছরে ‘বুড়িয়ে যাওয়া’ শিশু নিতু মারা গেছে

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জে বিরল রোগ ‘প্রজেরিয়ায়’ আক্রান্ত শিশু নিতু মারা গেছে। তার বয়স হয়েছিল ১৭ বছর।

এতো কম বয়সে মারা গেলেও এই শিশুকে দেখলে মনে হতো ৬০ বয়সের নারী।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জেলা শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। রাতে বাড়ির পাশে কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

মৃত্যুর সময় শিশুর মুখ ও শরীরের চামড়া কুঁচকানো এবং মাথার সব চুল পড়ে গিয়েছিল।

শিশুটির বাবা কামরুল ইসলাম জানান, ২০০৭ সালে নীতুর জন্ম হয়। ছয় ভাইবোনের পরিবারে সে চতুর্থ ছিল। তিন মাস বয়স থেকেই তার শরীরের চামড়া শক্ত হয়ে যেতে শুরু করে। তখন স্থানীয় চিকিৎসকদের দেখানো হয়। তারা নানা ওষুধও দিয়েছিলেন, কিন্তু রোগটি ঠিকভাবে কেউ ধরতে পারেননি।

পরে পাঁচ বছর বয়সের সময় ঢাকার চিকিৎসকরা জানান, নীতু বিরল প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত। এ ধরনের রোগীদের বেঁচে থাকার গড় বয়স ১৩ বছর। এরপর হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

চিকিৎসকরা জানান, বিরল হলেও বাংলাদেশে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত বেশ কয়েকজন রোগী পাওয়া গেছে।

প্রজেরিয়া রোগটি নিয়ে ব্রাড পিট অভিনীত ‘দি কিউরিয়াস কেস অফ বেনজামিন বাটন’ আর ভারতে অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘পা’ চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে।

প্রজেরিয়া এক ধরনের জিনেটিক ডিজঅর্ডার, যা বেশ বিরল। চিকিৎসকদের হিসেবে, প্রতি ৪০ লাখে একজনের মধ্যে এ ধরনের রোগ দেখা যায়। তবে এ পর্যন্ত বিশ্বে বড়জোর ১০০ প্রজেরিয়া আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা গেছে।

প্রজেরিয়া শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ প্রজেরাস থেকে, যার অর্থ অপ্রাপ্তবয়স্ক বৃদ্ধ। ১৮৮৬ সালে ড. জোনাথন হাচিনসন আর ১৮৯৭ সালে ড. হেস্টিংস গিলফোর্ড রোগটি সম্পর্কে আলোকপাত করেন বলে এর আরেক নাম হাচিনসন-গিলফোর্ড প্রজেরিয়া সিনড্রোম।

এক ধরনের বিক্রিয়ার কারণে দেহের কোষ দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং বয়োবৃদ্ধির প্রক্রিয়াটি দ্রুত হয়ে যায়। তবে জিনেটিক রোগ হলেও, এটি বংশানুক্রমিক বা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া কোনো রোগ নয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।