ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গাইবান্ধায় বেড়েছে নদ-নদীর পানি, দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১২ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৪
গাইবান্ধায় বেড়েছে নদ-নদীর পানি, দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ

গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র নদ ও ঘাঘট নদীর পানি আবারও বেড়েছে। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্রের পানি এখনও বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে।

কমেছে করতোয়া ও তিস্তা নদীর পানি।  

গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটাসহ চার উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও আবারও পানি বেড়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ ও ঘাঘট নদীর পানি। ফলে চরম দুর্ভোগে আছেন পানিবন্দি ৪০ হাজার পরিবারের লক্ষাধিক মানুষ।  

পানি কমতে থাকায় ফিরতে শুরু করেছিল নদী তীরবর্তী এলাকার বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষরা। তবে পানি বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন বানভাসিরা।

এখনও বিপৎসীমার ওপরে থাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত সদরের কামারজানি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি এলাকার জেগে উঠা এলাকা আবারও প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এতে হতাশ আর দুশ্চিন্তায় পড়েছে বন্যা কবলিত পরিবারগুলো।  

জেলায় এখনও পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন ৪০ হাজারেরও বেশি পরিবারের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। এর মধ্যে আবারও পানি বাড়ার কারণে দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না বন্যা দুর্গতদের।  

পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষজন শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। প্রকট আকার ধারণ করেছে গো-খাদ্যসহ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনও দেখা দিয়েছে কয়েকটি এলাকায়। লোকজন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। এবারের বন্যায় পানিতে তলিয়ে গেছে আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, কাউন ও আমন বীজতলাসহ ২ হাজার ৫০০ হেক্টরের অধিক জমির ফসল। ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের। পানি ওঠায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ১৫৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।  

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি ১২ সেমি বাড়লেও তা বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

এদিকে, তিস্তার নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ও করতোয়া নদীর পানি ২২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে, গত ৫ জুন পর্যন্ত জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সর্বোচ্চ ৮৯ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি সর্বোচ্চ ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি ওঠায় ১৪৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সাতটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তিনটি দাখিল মাদরাসাসহ মোট ১৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রাথমিক ও জেলা শিক্ষা বিভাগ। চলমান বন্যায় চার উপজেলায় ২ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমির আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, বীজতলা ও শাক-সবজি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, উজানে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় নদ-নদীর বেড়ে ব্রহ্মপুত্র এখনও বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। তবে সপ্তাহখানেকের মধ্যে বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যাবে।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী নাহিদ রসুল বলেন, বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকায় শুকনো খাবারসহ নগদ টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। সরবরাহ করা হচ্ছে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ চিকিৎসাসামগ্রী। এছাড়া প্রত্যেক উপজেলায় মেডিকেল, কৃষি, স্বেচ্ছাসেবক এবং লাইভস্টোক টিম কাজ করছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।