ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ কার্তিক ১৪৩২, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

জোবায়েদ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত বর্ষার মামাকে ছাড়াতে থানায় নামসর্বস্ব কয়েক ‘সাংবাদিক’

তোফায়েল আহম্মেদ, সিনিয়র মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:৩৬, অক্টোবর ২১, ২০২৫
জোবায়েদ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত বর্ষার মামাকে ছাড়াতে থানায় নামসর্বস্ব কয়েক ‘সাংবাদিক’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রদল নেতা মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার পর পুলিশ হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত ছাত্রী বর্ষার মামা ডা. ওয়াহীদকে ছাড়ানোর জন্য বংশাল থানায় নামসর্বস্ব কয়েকজন ‘সাংবাদিক’ গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  

সোমবার (২০ অক্টোবর) রাত নয়টার দিকে তারা বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলামের কক্ষে উপস্থিত হন।

এসব সাংবাদিকরা হলেন, সকালের সময়ের এইচ.এম. রকি, বাংলার সমাচারের মো. সোহেল রানা, ঢাকা প্রেসের মো. বদরুজ্জামান তালুকদার, শেষ খবরের বি.এম. আশিক হাসান এবং আরও কয়েকজন।

এ সময় প্রিয়াঙ্কা নামের এক সাংবাদিক নিজেকে পুলিশ হেফাজতে থাকা বর্ষার ফুপু হিসেবে পরিচয় দিয়ে রফিকুল ইসলামেকে বলেন, বর্ষার মামা তো রাতে খাবার দিতে এসেছিলেন, তাকে আটক করা হলো কেন? তাকে ছাড়ানোর কোনো ব্যবস্থা আছে কিনা?

সঙ্গে থাকা সাংবাদিকরা (আধুনিক সংবাদ, দৈনিক বাংলা সমাচার, ঢাকা এক্সপ্রেস, শেষ খবর, দৈনিক সকালের সময়) তার বক্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তারা ওসিকে জিজ্ঞেস করেন, ওয়াহীদকে আটক রাখা কতটুকু আইনসঙ্গত এবং তদন্তের ফ্রেস ব্রিফিং কখন হবে ইত্যাদি।

ওসি রফিকুল ইসলাম এসব প্রশ্নের উত্তরে জানান, আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। কোনো একটি বিষয়ে আলাদা আলাদা উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। পুরো বিষয়টি তদন্তের পর সার্বিক ফলাফল জানানো হবে। সিদ্ধান্ত পৌঁছানো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয়।

বংশাল থানায় মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতে গিয়েছিলেন বাংলানিউজের সাংবাদিক তোফায়েল আহম্মেদ। তিনি প্রশ্ন করলে ওসি জোবায়েদ হত্যা মামলার বিষয়ে বলেন, ইতিমধ্যে তদন্ত শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামীকাল ব্রিফিং হবে। ব্রিফিংয়ের আগে আমার কিছু করার নেই।

জানা গেছে, জোবায়েদ হত্যার পর অভিযুক্ত বর্ষার মামা ভোরে চার-পাঁচজন মানুষসহ থানার পেছনে অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। সেই সময়ে তার কাছে খাবারের কোনো জিনিস পাওয়া যায়নি।

জোবায়েদ হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি তিনি জবি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। গত এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানিটোলার ১৫, নুরবক্স লেনে অবস্থিত রৌশান ভিলা নামের বাসায় বর্ষা নামে এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। বর্ষার বাবার নাম গিয়াস উদ্দিন।

গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকাল আনুমানিক ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তিনতলায় জোবায়েদকে হত্যা করা হয়। বাসার নিচতলার সিঁড়ি থেকে তিনতলার সিঁড়ি পর্যন্ত রক্তের চিহ্ন লক্ষ্য করা যায়। তিনতলার সিঁড়িতে জোবায়েদের উপুড় হয়ে পড়া অবস্থায় দেখা গেছে।

এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।