ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

টানা বর্ষণে কক্সবাজারে ২ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২৪
টানা বর্ষণে কক্সবাজারে ২ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

কক্সবাজার: চারদিনের টানা বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের নয় উপজেলার দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।  

এতে অন্তত তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এসব এলাকার আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়ক ডুবে গেছে। এতে চলাচলে জনসাধারণকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
 
এদিকে ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে রামু উপজেলায় ইসফাম (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান বলেন, নিহত ইসফাম ওই ইউনিয়নের সমিতি পাড়া এলাকার ইমাম হোসেনের ছেলে।  

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের চেইন্দা এলাকা হাঁটু পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে।  

এ ছাড়া চকরিয়া-মানিকপুর সড়ক, রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়ক, চিরিঙ্গা-বদরখালী সড়কসহ জেলার বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়কে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।  

উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, জেলার উখিয়া, টেকনাফ, চকরিয়া, পেকুয়া, রামু, সদর, ঈদগাঁও, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলার দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে।  

মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘর-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় বন্যা কবলিত এলাকায় রান্নাবান্না করতে পারছে না বাসিন্দারা। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছেন।  

চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, পাহাড়ি ঢলে মাতামুহুরী নদীর ১০-১২টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে ঢলের পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে। নদীর দুপারের পাঁচ ইউনিয়নে পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকে কয়েক হাজার বাড়ি ঘর প্লাবিত হয়েছে।  
 
বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী রামু ও সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ৭০ হাজার বাসিন্দা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।  

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া, নাজিরারটেক, নুনিয়ারছড়াসহ কয়েকটি এলাকা ডুবে আছে।  

এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে কয়েকদিন ধরে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। এতে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষেও জেলেরা মাছ ধরতে সাগরে নামতে না পেরে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।  

কক্সবাজারে আগামী শনিবার পর্যন্ত অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ সময় পাহাড় ধসের শঙ্কা রয়েছে।  

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে জেলার বেশকিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও অর্থ সাহায্য দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জেলার বন্যাকবলিত সাত উপজেলায় ৪২ টন চাল ও পাঁচ লাখ টাকা নগদ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৩২ হাজার মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২৪
এসবি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।