ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে নিখোঁজ, ১৬ দিন পর মর্গে মিলল গুলিবিদ্ধ মরদেহ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৪
ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে নিখোঁজ, ১৬ দিন পর মর্গে মিলল গুলিবিদ্ধ মরদেহ 

ময়মনসিংহ: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে ৪ আগস্ট নিখোঁজ হন ময়মনসিংহের গফরগাঁও চরআলগী ইউনিয়নের চর কামারিয়া গ্রামের কামরুজ্জামান। এ ঘটনার ১৬ দিন পর গত ১৯ আগস্ট রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে তার গুলিবিদ্ধ মরদেহের সন্ধান পেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনরা।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকালে গফরগাঁও উপজেলার চর কামারিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

শহীদ কামরুজ্জামান চর কামারিয়া গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী মো. আব্দুর রাজ্জাকের দ্বিতীয় ছেলে। কামরুজ্জামান দাম্পত্য জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক।  

শহীদ কামরুজ্জামানের স্ত্রী শামীরা জাহান পপি খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমার স্বামী ঢাকার উত্তরা থেকে ভাড়ায় প্রাইভেটকার চালাতেন। তবে কিছুদিন আগে তিনি পোল্যান্ড যাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। এরই মাঝে দেশে আন্দোলন শুরু হলে গত ৪ আগস্ট তিনি উত্তরায় ছাত্রদের সঙ্গে মিছিলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজ হন। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আমরা তার সন্ধান পাইনি। সর্বশেষ গত ১৯ আগস্ট তার মরদেহ রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছে জানতে পারি। এর আগে গত ৪ আগস্ট থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর থেকে হাসপাতাল মর্গে অজ্ঞাত হিসেবে তার মরদেহ পড়ে ছিল।  

স্থানীয়রা জানান, প্রাইভেটকার চালিয়ে সংসার চালাতেন কামরুজ্জামান (৩০)। বাবা থাকেন সৌদিতে, বড় ভাই থাকেন বেলজিয়ামে। সে ঢাকার উত্তরায় বসবাস করে ড্রাইভিং করার পাশাপাশি পোল্যান্ড যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

কামরুজ্জামানের শ্যালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মর্গে পড়ে থাকা মরদেহের আঙুলের ছাপ মিলিয়ে পরিচয় শনাক্তের পর পুলিশ আমাদের খবর পাঠায়। পরে মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করে বাড়ি নিয়ে এসেছি। এ সময় মরদেহের মাথা ও শরীরে ৮টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।

শ্যালক জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ময়নাতদন্ত করে মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কামরুজ্জামান কোনো দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না।  

এ বিষয়ে চর কামারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিক বলেন, ঢাকা থেকে পুলিশের এক কর্মকর্তা আমার কাছে ফোন করে কামরুজ্জামানের ছবি পাঠায়। ওই ছবি দেখে চিনতে পেরে আমি কামরুজ্জামানের পরিবারকে জানালে তারা মরদেহ শনাক্ত করে বাড়িতে এনে দাফন করে। ঘটনাটি অনেক মর্মান্তিক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।