ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের গাইবান্ধা অংশে রাতভর যানজটে নাকাল যাত্রীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২৪
রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের গাইবান্ধা অংশে রাতভর যানজটে নাকাল যাত্রীরা

গাইবান্ধা: রংপুর-ঢাকা ছয় লেন মহাসড়কের গাইবান্ধা অংশের পলাশবাড়ী ও গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের চার কিলোমিটার এলাকায় প্রতিনিয়ত তীব্র যানজটে নাকাল হচ্ছেন দূরপাল্লার যাত্রী-চালকরা।

চলমান ছয় লেন সড়ক নির্মাণ কাজের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সেইসঙ্গে বৃষ্টিতে সড়কের দুধারে পানি আটকে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজটের।

রোববার (৬ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে পলাশবাড়ী অংশে সড়কের ওপর একটি ট্রাক বিকল হওয়ায় যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করে। সড়কের দুপাশে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে। ফলে রাতভর দুর্ভোগ পোহাতে হয় ভুক্তভোগীদের।

মামুন ফারুক নামে বিকল ট্রাকটির চালক গোলাম রব্বানী জানান, তিনি রংপুরের মিঠাপুকুর থেকে কলা নিয়ে নোয়াখালী যাচ্ছিলেন। পথে পলাশবাড়ী সদরের আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের সামনে ট্রাকটি বিকল হয়ে যায়। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। রাত ১২টা পর্যন্ত সম্ভাব্য সব চেষ্টা করেও সেটি সচল করা সম্ভব হয়নি।  

রংপুর থেকে পাবনাগামী পাটবাহী ট্রাকের চালক সুজন মিয়া জানান, ছয় লেন সড়ক নির্মাণের লক্ষ্যে সড়কের দুপাশে গর্ত করা হয়েছে। সেগুলো বৃষ্টির কারণে ভর্তি ও দেবে যাওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে।  

ঢাকা থেকে রংপুরগামী শ্যামলী পরিবহনের সহকারী রুবেল মিয়া বলেন, তিনি দীর্ঘ এক ঘণ্টা যানজটে আটকা আছেন। এতে যাত্রীসহ সবাই চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।  

ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, রংপুর-ঢাকা ছয় লেন মহাসড়কের গাইবান্ধার ৩২ কিলোমিটার অংশের হিংসভাগই চলাচলের উপযুক্ত হয়েছে। কিন্তু গোবিন্দগঞ্জের মায়ামনি থানা মোড় থেকে দক্ষিণ বাসস্ট্যান্ড ও পলাশবাড়ীর ড্রিমল্যাণ্ড পার্ক থেকে ব্র্যাক মোড় পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার অংশে যানজট লেগেই থাকে। ফলে তীব্র জ্যামে আটকে সময় অপচয়ের পাশাপাশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। বৃষ্টি হলে তা আরও তীব্র আকার ধারণ করে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নানা জটিলতার কারণে পলাশবাড়ী ও গোবিন্দগঞ্জে অধিগ্রহণকৃত জমির ওপরস্থ অবকাঠামো দেরীতে অপসারণ করায় সড়ক নির্মাণ কাজের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। সেইসঙ্গে বৃষ্টি দুর্ভোগের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লাইসুর রহমান বলেন, যানজট মোকাবিলায় পুলিশ কাজ করছে। গাইবান্ধা থেকে রেকার আসছে। সেটি পৌঁছালেই দ্রুত বিকল ট্রাকটি মহাসড়ক থেকে সরিয়ে ফেলা হবে এবং যান চলাচল অনেকটা স্বাভাবিক হবে। মূলত: চলমান ছয় লেন সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হলেই যানজট থেকে মুক্তি মিলবে।  

এদিকে সোমবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে পলাশবাড়ী থানার ডিউটি অফিসার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আল মাহমুদ প্রধান বাংলানিউজকে জানান, বিকেল ট্রাকটি মহাসড়ক থেকে সরিয়ে ফেলা সম্ভব হয়নি। হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখভাল করছেন।

প্রসঙ্গত, গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্র জানায়, ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়কের ৩২ কিলোমিটার অংশ পড়েছে গাইবান্ধা জেলায়। দক্ষিণে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফাঁসিতলা থেকে উত্তরে সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট পর্যন্ত মহাসড়কটি বিস্তৃত।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃযোগাযোগে একটি মহাপরিকল্পনা হাতে নেয় সরকার। প্রকল্পের নাম দেয় ‘সাউথ এশিয়ান সাব–রিজিওনাল ইকোনমিক করপোরেশন’ (সাসেক)। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার কাজ হাতে নেওয়া হয়।

গাইবান্ধার ৩০ কিলোমিটার অংশের কাজের দায়িত্ব পায় চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন’ (সিএসসিইসি)।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।