ঢাকা, সোমবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডরা ধরাছোঁয়ার বাইরে: অ্যাটর্নি জেনারেল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট| | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডরা ধরাছোঁয়ার বাইরে: অ্যাটর্নি জেনারেল

ঢাকা: বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডদের অনেকেই এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের বিচারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) বাংলাদেশ রাইফেলসে (বিডিআর) হত্যাকাণ্ড নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে আমরা জাতির সূর্য সন্তানদের হারিয়েছি। তাদের হারানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ভিতকে আঘাত করা হয়েছে। ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের কবর রচনা করে নৈরাজ্যবাদের জন্ম দিয়েছিল পতিত আওয়ামী সরকার। ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিডিআরের পোশাক পরে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডদের অনেকেই এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের বিচারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। বাংলাদেশের ওপর আধিপত্যবাদী শক্তির দখলদারিত্ব কায়েমের জন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশই ছিল পিলখানা হত্যাকাণ্ড। এটি কোনো বিদ্রোহ ছিল না, ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে দেশকে চোরাবালির সন্ধিক্ষণে দাঁড় করানো হয়েছিল। একটি রাষ্ট্র বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে বাংলাদেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে খুন—গুমে জড়িত ব্যক্তিকে আশ্রয় দিয়ে সেই রাষ্ট্র বাংলাদেশের মানুষের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দুই মাসের মাথায় ঢাকার পিলখানায় দেশের ইতিহাসে কলঙ্কময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। যা ইতিহাসের এক কালো দাগ। দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর চরম আঘাত আনার লক্ষ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। কোনো দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নয়, সেনাবাহিনী যাতে দুর্বল হয়ে যায়, বিডিআর নামে যাতে শক্তিশালী কোনো বাহিনী না থাকে তার জন্যই এই হত্যাকাণ্ড। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পিলখানা হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার সুযোগ থাকলেও ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এটাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার লোক দেখানো চেষ্টা করা হয়েছে। দরবার হলের কাছে র‌্যাবের একটি পেট্রোল টিম থাকলেও বিদ্রোহ দমনে তাদের পিলখানায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমরা লজ্জিত, দুঃখিত সেই সব সন্তানদের প্রতি যারা পিলখানার নারকীয় হত্যাকাণ্ডে তাদের বাবা-মা হারিয়েছেন, যারা স্বামী হারিয়েছেন। স্বজনহারা এসব পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমাদের নেই। যেদিন এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার হবে সেদিন হয়তো স্বজনহারারা কিছুটা স্বস্তি পাবেন।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘ক্ষমতায় টিকে থাকতে আওয়ামী লীগ সরকার বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে তেজগাঁও কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, ব্যারিস্টার এইচ এম সানজিদ সিদ্দিক, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মিশন ও সাংবাদিক মো. আতিকুর রহমান। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫
এমএমআই/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।