ঢাকা: প্রকৌশলীদের পদবি ব্যবহারে (ইঞ্জিনিয়ার না ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার) কে কী লিখবেন-সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তবে তিনি জানিয়েছেন, এই বিষয়ে তিনটি পরামর্শ আলোচনায় উঠে এসেছে, যেগুলো বিবেচনায় নেওয়া হবে।
এর আগে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় প্রকৌশল পেশাজীবীদের সমস্যা নিরসনে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সরকার।
কমিটির সুপারিশ না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আন্দোলনকারীদের অভিভাবক হিসেবে উপস্থিত থাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষরা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
ফাওজুল কবির খান বলেন, ভিন্ন দাবিতে বিএসসি প্রকৌশলী এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা আন্দোলন করছেন। বিএসসি প্রকৌশলীদের তিন দফা দাবি এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সাত দফা দাবি।
আজকে আমরা বসেছিলাম ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের অভিভাবকদের সঙ্গে। আপনারা জানেন আদালতে খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে অ্যামিকাস কিউরির সাহায্য নেওয়া হয়-মতামত নেওয়ার জন্য। আমরা তাদেরকে মতামত দিতে বলেছি। আমাদের ডাকে সবাই এসেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা এসেছিলেন, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষরা এসেছিলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
আলোচনায় আমরা কয়েকটি সিদ্ধান্তে এসেছি। আমরা দেখেছি দুই পক্ষের দাবিগুলো খানিকটা পরস্পরবিরোধী। একজনের দাবি গ্রহণ করলে আরেকজন অসন্তুষ্ট হবেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে এর ভেতরে একটি সেতু গড়ে তোলা যায় কিনা, সেই জন্য আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।
আমরা ওনাদের পরামর্শের ভিত্তিতে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছি। ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ারস বাংলাদেশ, ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক, আন্দোলনকারীদের একজন প্রতিনিধি। আবার ওই পক্ষে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পক্ষে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের একজন প্রতিনিধি, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একজন শিক্ষক এবং আন্দোলনকারীদের একজন প্রতিনিধি থাকবেন।
এই কমিটি পরস্পরবিরোধী দাবিগুলোর ভিত্তিতে একটি বন্ধন তৈরি করার জন্য কাজ করবেন, যাতে তারা একমত হতে পারেন। অনেকটা জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের মতো। কারণ, নিজেরা সমাধান করলে সেটাই সবচেয়ে বড় সমাধান।
উপদেষ্টা বলেন, ওনারা এও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, ওই কমিটির সুপারিশ না আসা পর্যন্ত তারা আর কোনো আন্দোলন করবেন না। রাস্তাঘাটে জনদুর্ভোগ হয়-এমন কোনো কাজে তারা লিপ্ত হবেন না।
আরেকটা জিনিস আমরা আলোচনা করেছি-কে কোন পদবি লিখবেন, এটার ব্যাপারে আমরা কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হইনি। তবে আলোচনা হয়েছে-ওনাদের কাছ থেকে তিনটি পরামর্শ পেয়েছি। প্রথমত, স্নাতক ডিগ্রিধারীরা ‘ইঞ্জিনিয়ার’ লিখবেন, অন্যরা নামের আগে ‘ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার’ লিখবেন। দ্বিতীয়ত, নামের আগে কেউ কিছু লিখবেন না, নামের পরে লিখবেন। তৃতীয়ত, প্রস্তাব হচ্ছে-কিছুই লিখবেন না। এসব পরামর্শ আমরা নিয়েছি।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এমআইএইচ/এসআইএস