ঢাকা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চূড়ান্ত নিয়োগ ও যোগদানের দাবিতে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মহাসমাবেশ করছেন তৃতীয় ধাপে সুপারিশপ্রাপ্তরা।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে মহাসমাবেশ শুরু করেন সুপারিশপ্রাপ্তরা।
মহাসমাবেশে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে সুপারিশপ্রাপ্তরা অংশ নিয়েছেন। তাদের ‘আমি কে তুমি কে, শিক্ষক শিক্ষক’, ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’, ‘প্রথম ধাপ স্কুলে, আমরা কেন রাজপথে’, ‘দ্বিতীয় ধাপ স্কুলে. আমরা কেন রাজপথে’,‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘আমার বোনের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে শোনা যায়।
আন্দোলনকারীরা জানান, ২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালে ২৯ মার্চ। ফলাফল প্রকাশ করা হয় একই বছরের ২১ এপ্রিল এবং ১২ জুন ভাইভা সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ৩১ অক্টোবর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়। পরে একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে ছয় মাসের জন্য নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করেন।
তারা আরও জানান, ১৪ জানুয়ারি প্রাইমারি ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায়ের সাথে সুপারিশপ্রাপ্তদের প্রতিনিধি দল দেখা করলে তাদের আশ্বাস দেন সুপারিশপ্রাপ্ত ৬ হাজার ৫৩১ জন শিক্ষকের মধ্যে সবার নিয়োগ চূড়ান্ত হবে, কেউ বাদ যাবে না। কিন্তু এরপর চেম্বার জজ আদালত, আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্টে সাতটি শুনানির পর চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ফলাফল বাতিলের ঘোষণা দেন আদালত। এরপর থেকে আন্দোলনে নামেন সুপারিশপ্রাপ্তরা। গত ১১ দিন ধরে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ভেতর তিনবার তাদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলপ্রয়োগ করে।
মো. রবিউল আলম নামের এক সুপারিশপ্রাপ্ত বলেন, আমরা গত ১১ দিন ধরে আমাদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আজ আমরা মহাসমাবেশ করছি। সরকার আমাদের অধিকার দিয়ে আবার কেড়ে নিয়েছে। আমরা আশা করি, সরকার আমাদের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না।
জান্নাতুল নাঈম সুইটি নামের আরেক আন্দোলনকারী বলেন, একই নিয়োগের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ হয়ে গেছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপে আমাদের সুপারিশ করেও তা স্থগিত করা হয়েছে। এটা আমাদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। আজকে আমাদের কোর্টে শুনানি চলছে। সেখান থেকে কোনো ফলাফল না এলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।
তিনি আরও বলেন, রিকশাচালক, সিএনজি অটোচালকদের অযৌক্তিক দাবি পূরণ হয়। আমাদের যৌক্তিক দাবি পূরণ হচ্ছে না। বরং আমরা লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছি।
এদিকে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মহাসমাবেশ ঘিরে শাহবাগে পুলিশ, ডিবিসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫
এসসি/এএটি