ঢাকা, সোমবার, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১, ১০ মার্চ ২০২৫, ০৯ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

ধর্ষণের পর হত্যা করে রেললাইনে ফেলে রাখা হয় তরুণীকে 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৫
ধর্ষণের পর হত্যা করে রেললাইনে ফেলে রাখা হয় তরুণীকে 

পঞ্চগড়: গত ১৪ জানুয়ারি পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার কিসমত এলাকায় রেললাইন থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর ধর্ষণের আলামত মিললেও অজ্ঞাত ছিল আসামি।

 

অবশেষে ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে স্থানীয়দের মাধ্যমে এক যুবক আটকের পর তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে বেরিয়ে এলো অজ্ঞাতপরিচয় ওই নারীর হত্যার তথ্য।

জানা গেছে, একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে পরিচয়ের পর তরুণীকে নিয়ে কিসমত এলাকার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে তাকে মাথায় ইট দিয়ে আহত করে তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে যৌনাঙ্গ, স্তনসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। পরে মরদেহ ফেলে রাখা হয় রেললাইনে। এমন নৃশংস হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন হত্যাকারী রিফাত বিন সাজ্জাদ (২৩)।  

ক্রাইম থ্রিলার সিনেমার মতো সব কিছু লুকালেও শেষ রক্ষা হলো না আসামির। এবার ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হন তিনি। তারপর তার মোবাইল ফোনে পাওয়া ভিডিওর সূত্র ধরেই বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকাণ্ডের সব কাহিনি। আসামি রিফাত বিন সাজ্জাদের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাঝগ্রামে। তিনি ওই এলাকার আকতার হোসেনের ছেলে।

সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে পঞ্চগড় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী।

পুলিশ সুপার জানান, গত ১৪ জানুয়ারি জেলার আটোয়ারী উপজেলার কিসমত এলাকায় রেললাইনে একটি অজ্ঞাত নারীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। হত্যাকাণ্ড হলেও এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারছিলো না পুলিশ। থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। ঠাকুরগাঁওয়ের ভুল্লি এলাকার একটি পরিবার তাদের মেয়ে মনে করে মরদেহ গ্রহণ করে দাফন সম্পন্ন করেন।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের পরও আসামি সাজ্জাদ একের পর অপরাধ কর্ম চালিয়ে যেতে থাকে। গত ৮ মার্চ দিবাগত রাতে আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর এলাকার তাহিরুল ইসলামের বাড়িতে ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে সাজ্জাদকে উত্তম মাধ্যম দেন স্থানীয়রা। এ সময় তার মোবাইলে একটি নারীকে বেঁধে রাখার ভিডিও দেখতে পান তারা। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি অজ্ঞাত ওই নারীকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন।  

তিনি জানান, তার মাকে নিয়ে গালি দেওয়ায় প্রথমে ওই নারীকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। পরে যৌনাঙ্গ, স্তনসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকু দিয়ে কেটে হত্যা করা হয়। তারপর মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় রেললাইনে।

পরে আসামি সাজ্জাদকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে আটোয়ারী থানায় ধর্ষণের পর হত্যা ও চুরির দুটি মামলা হয়েছে। রোববার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।