ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩২, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফিলিস্তিন-রোহিঙ্গা সংকট ভুলে যাবেন না, বিশ্ব সম্প্রদায়কে ড. ইউনূস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
ফিলিস্তিন-রোহিঙ্গা সংকট ভুলে যাবেন না, বিশ্ব সম্প্রদায়কে ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফিলিস্তিন ও রোহিঙ্গা সংকট ভুলে না যেতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাতারের দোহায় আর্থনা সম্মেলনের মূল বক্তব্যে তিনি বলেন, বিশ্বকে মানবিক সংকট উপেক্ষা করা চলবে না, যা ফিলিস্তিন থেকে শুরু করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দায়মুক্তি ও মানবাধিকারের প্রতি স্পষ্ট অবহেলা বিশ্বের যেকোনো স্থানে উন্নয়নের জন্য হুমকি।

তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনে চলমান দুর্ভোগ শুধু একটি অঞ্চলের বিষয় নয়, এটি সমগ্র মানবজাতির উদ্বেগ। ফিলিস্তিনিরা যেন অবহেলিত না হয়।

২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, মিয়ানমারের দীর্ঘস্থায়ী সংকট এখন আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বহু বছর ধরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, যার ফলে সমাজ, অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর বিরাট প্রভাব পড়েছে।

সংহতির নিদর্শন হিসেবে জাতিসংঘ মহাসচিব সম্প্রতি ওই ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করেছেন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বৈশ্বিক প্রচেষ্টা চলতে থাকলেও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ, টেকসই ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বিশ্ব নেতাদের একত্রিত হওয়া প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ব যদিও একটি সহনশীল, সমৃদ্ধ ও টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে, তবুও এমন অনেক হুমকি আছে, যা ভবিষ্যতের উন্নয়নকে বিঘ্নিত করতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা এক অনিশ্চিত সময়ে বাস করছি, যেখানে বহুপাক্ষিকতা হুমকির মুখে, জলবায়ু পরিবর্তন দ্রুততর হচ্ছে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে এবং মানবিক সংকট গভীরতর হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, নতুন নতুন আদর্শ, প্রযুক্তি ও শাসন ব্যবস্থা আমাদের বিশ্বকে দ্রুত পরিবর্তন করছে, যার ফলে অনেক পুরোনো বিশ্বাস আজ অচল। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা পুনরায় স্থাপন করার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আজকের সংকটময় বিশ্বে যুদ্ধ ও সংঘাত অধিকার হরণ করে এবং অর্থনীতিকে ব্যাহত করে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা হলো যেকোনো অর্থবহ ও টেকসই উন্নয়নের মৌলিক পূর্বশর্ত।

জলবায়ু পরিবর্তনকে সব মানুষের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তবুও আমরা এখনও আত্মবিধ্বংসী মানসিকতা ধরে রেখেছি। আমরা এমন এক জীবনযাপন বেছে নিয়েছি, যা প্রকৃতির বিরুদ্ধে, যা সীমাহীন ভোগে বিশ্বাসী।

তিনি আরও বলেন, পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এমন একটি নতুন জীবনধারা প্রয়োজন, যা শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ, সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ ও উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে শূন্য বেকারত্ব নিশ্চিত করে।  

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এভাবে আমরা এমন এক নতুন সভ্যতা গড়ে তুলবো, যা সবার জন্য, সর্বত্র টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ