ঢাকা: রাজধানীর পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে চিহ্নিত দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তাররা হলেন—হুদা মামুন (৪০) এবং অরিন (৩৫)।
শনিবার দিবাগত গভীর রাতে পল্লবী থানাধীন নিউ টাউন বাজার মৎস্য আড়তের একটি গোপন কক্ষ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবির মিরপুর বিভাগ। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
রোববার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিবি মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী দুবাই প্রবাসী মশিউর রহমান মশী গ্রুপের অন্যতম প্রধান সদস্য হুদা মামুন, অরিন এবং সোহেলের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে পল্লবী এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে চাঁদা আদায়সহ মাদক ব্যবসা করে আসছিল। গত ১১ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত মিল্লাত বিহারি ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ এবং চাঁদাবাজির ঘটনাকে কেন্দ্র করে পর পর তিনদিন সেখানে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
এতে মিল্লাত বিহারি ক্যাম্পসহ আশেপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকেন। এভাবে সন্ত্রাসী গ্রুপটি পল্লবী এলাকাধীন মিল্লাত বিহারি ক্যাম্প ও আশেপাশের সাধারণ ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের মাঝে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
ডিসি মিজানুর রহমান আরও জানান, ওই তিন দিনের গোলাগুলির ঘটনায় ডিবি-মিরপুর বিভাগ থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার দিবাগত গভীর রাতে পল্লবী নিউ টাউন বাজার মৎস্য আড়তে অভিযান পরিচালনা করে ডিবি-মিরপুর বিভাগের একটি চৌকস টিম। অভিযানকালে অরিন ও হুদা মামুনকে মৎস্য আড়তের একটি গোপন কক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে একপর্যায়ে তারা গুলিবর্ষণের ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র তাদের হেফাজতে থাকার কথা স্বীকার করেন। অরিন ও হুদা মামুনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ডিবির টিম ওই কক্ষ তল্লাশি করে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ব্যবহৃত একটি বিদেশি রিভলবার ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। এ ছাড়া ওই কক্ষটির একটি গোপন স্থান থেকে হুদা মামুনের দেখানো মতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পুলিশের খোয়া যাওয়া এসএমজির ২০ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। তাদের কাছে আরও অস্ত্র ও গুলি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার অরিন ডিএমপির বিভিন্ন থানায় রুজুকৃত ছিনতাই, ডাকাতির প্রস্তুতি, চুরি ও মাদকের আটটি মামলার এজাহারভুক্ত এবং চার্জশিটভুক্ত আসামি। এ ছাড়া গ্রেপ্তার হুদা মামুনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। তাদের
বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
প্রসঙ্গত, এ গ্রুপের অপর সদস্য সোহেলকে গত ২৫ এপ্রিল মাদকসহ পল্লবী থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তিনি বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৫
এসসি/এমজেএফ
বাংলাদেশ সময়: ৭:০৪ পিএম, এপ্রিল ২৭, ২০২৫ /