ঢাকা: সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনার (রোডক্র্যাশ) হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। প্রতিদিনই এসব দুর্ঘটনায় ঝরছে তাজা প্রাণ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, গত ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে ৮ দিনে ১১০টি দুর্ঘটনায় ১৩২ জন নিহত এবং ২০৮ জন আহত হন। অন্যদিকে, ঈদুল আজহার আগে ও পরে ১২ দিনে ২১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২১৫ জন এবং আহত হন আরও ২৭৮ জন।
এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ৯ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছে ঢাকা আহছানিয়া মিশন।
মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত ‘সড়ক নিরাপত্তা জোরদারকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সভায় এসব সুপারিশ তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।
আহছানিয়া মিশনের ৯ দফা সুপারিশ:
১. নিরাপদ গতি নির্ধারণ: ঈদসহ যেকোনো বড় উৎসবের সময় সড়কে নিরাপদ গতিসীমা নির্ধারণ এবং গতি ব্যবস্থাপনার জন্য গাইডলাইন প্রণয়ন।
২. চালকদের বিশ্রাম: চালকদের নির্ধারিত কর্মঘণ্টা নিশ্চিত করে পর্যাপ্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা।
৩. ধীরগতির যানবাহন নিয়ন্ত্রণ: মহাসড়কে নছিমন, করিমন, টেম্পু, ব্যাটারিচালিত যানবাহনসহ ধীরগতির যান চলাচল বন্ধ।
৪. পথচারী নিরাপত্তা: হকারমুক্ত ফুটপাত, ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারে উৎসাহ, মুঠোফোন ব্যবহার এড়ানো এবং জেব্রা ক্রসিং ব্যবহারে সচেতনতা।
৫. মোটরসাইকেল নিরাপত্তা: চালক ও আরোহীর জন্য মানসম্মত হেলমেট নিশ্চিত এবং আলাদা মোটরসাইকেল লেনের ব্যবস্থা।
৬. ফিটনেসহীন যানবাহন অপসারণ: মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও ফিটনেসবিহীন যান দ্রুত অপসারণ।
৭. মাদক সেবন রোধ: চালকদের মাদক গ্রহণ রোধে বিদ্যমান বিধি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন।
৮. সিটবেল্ট ও শিশু সুরক্ষা: চালকসহ যাত্রীদের সিটবেল্ট ব্যবহারে গাইডলাইন ও শিশুদের জন্য নিরাপদ আসনের ব্যবস্থা।
৯. জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ: কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিতে একটি ‘জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ’ গঠন।
সভায় ইকবাল মাসুদ বলেন, ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনে সড়ক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি। আমাদের প্রয়োজন এমন একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন, যেখানে চালক, যাত্রী ও পথচারী সবার সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
এমএমআই/এসআইএস