ঢাকা: হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের নবম দিনের আলোচনা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় অন্যদের মধ্যে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকবে। তবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে যে সার্কিট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন তার পরিবর্তে রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকবে এবং প্রধান বিচারপতি কর্তৃক প্রতিটি বিভাগে এক বা একাধিক স্থায়ী বেঞ্চ থাকবে। অর্থাৎ হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে। এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে সংবিধানের ১০০ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিবর্তন হবে।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন সম্পর্কিত বিধান নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, বিগত সময়ে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতার ব্যাপক অপব্যবহার হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেছে।
তিনি বলেন, সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন বিষয়ে যে ঐকমত্য হয়েছে তা হলো- ‘কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত যেকোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত মানদণ্ড, নীতি ও পদ্ধতি অনুসরণক্রমে উক্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করা হইবে’।
আলী রীয়াজ আশা প্রকাশ করে বলেন, সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন বিষয়ে ঐকমত্য কমিশন থেকে দেওয়া প্রস্তাবের আলোকে যে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে তা ভবিষ্যতে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। এতদিন ধরে এই ক্ষমতার যে অপব্যবহার হয়েছে তা বন্ধ হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ-এবি পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। কমিশনের পক্ষ থেকে আগামী ৭ জুলাই পুনরায় আলোচনার দিন ধার্য করা হয়েছে।
এ পর্যন্ত সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা সম্পর্কিত বিধান ও বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়ে আলোচনা নিষ্পত্তি হওয়ার কথা জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
এমইউএম/জেএইচ