ঢাকা: ‘অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি’-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২২ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৫ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একযোগে সারা দেশে উদযাপিত হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এবারের মৎস্য সপ্তাহকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদ ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। সপ্তাহব্যাপী উদযাপনে থাকবে-মৎস্য পদক প্রদান, সচেতনতামূলক কর্মসূচি, র্যালি, আলোচনা সভা, সেমিনার, কর্মশালা ও প্রদর্শনী ইত্যাদি।
মৎস্য উপদেষ্টা আরও জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয় মৎস্য পদক নীতিমালা অনুযায়ী মৎস্য খাতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৭টি ক্ষেত্রে মোট ১৬ জন-মৎস্যচাষি, উদ্যোক্তা, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, গবেষক, প্রযুক্তি উদ্ভাবক, সম্প্রসারণ কর্মী ও মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীকে জাতীয় মৎস্য পদক ২০২৫ প্রদান করা হবে।
প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এই পদক প্রদান করবেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের অবদান তুলে ধরে ফরিদা আখতার বলেন, নিরাপদ আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনসহ সার্বিক উন্নয়নে মৎস্য খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ের পরিমাণ ৩৮.৬ লাখ হেক্টর, বন্ধ জলাশয় ৮.৫ লাখ হেক্টর এবং সামুদ্রিক জলসীমা রয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার, যা মৎস্য সম্পদের বিশাল উৎস।
তিনি বলেন, টেকসই আহরণ, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য সরকার কার্যকর ও সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চলেছে। ফলে বাংলাদেশ আজ মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পাশাপাশি গবেষণাভিত্তিক, পরিবেশবান্ধব ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে অভ্যন্তরীণ ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে।
বুই, কাতলা, মৃগেল, পুঁটি, টেংরা, কৈ, শিং, মাগুর, বোয়াল, আইড়সহ বিপন্ন ও বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় মাছের অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা এবং তার টেকসই ব্যবস্থাপনায় সরকার দৃঢ়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এসব লক্ষ্য সামনে রেখেই এবারের জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ উদযাপন করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ফরিদা আখতার।
জিসিজি /এসআইএস