ঢাকা, রবিবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

গ্যাং কালচার দ্বন্দ্বে বাড়ছে খুন

নিউজ ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:৫০, আগস্ট ৩, ২০২৫
গ্যাং কালচার দ্বন্দ্বে বাড়ছে খুন

খুলনায় এবার অপরাধের অন্ধকার জগতের সদস্যরা শিকার হচ্ছেন টার্গেট কিলিংয়ে। মাদকের টাকা ভাগাভাগি, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি কিংবা পূর্বশত্রুতার জের ধরে বিভিন্ন গ্যাং (সন্ত্রাসী গ্রুপ) নিজেদের মধ্যে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছে।

ফলে প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হচ্ছে সন্ত্রাসী, মাদক কারবারিদের লাশের সারি। গ্যাং অস্থিারতায় ‘স্বস্তি’তে নেই পুলিশও। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে সোনাডাঙ্গা সবুজবাগ এলাকায় ঘরে ঢুকে মনোয়ার হোসেন টগর (২৭) নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ জানায়, তিনি সন্ত্রাসী পলাশ শেখ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। টগরের বিরুদ্ধে মারামারি, অবৈধ অস্ত্র, আইনশৃঙ্খলা বিঘœকারী অপরাধের ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে। গত ২৮ জুন রূপসার রাজাপুর এলাকায় প্রতিপক্ষের গুলিতে সন্ত্রাসী সাব্বির শেখ নিহত হন। তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী রনি চৌধুরী ওরফে গ্রেনেড বাবু গ্রুপের সদস্য ছিলেন। গত ২৫ মে রূপসার মোছাব্বরপুর গ্রামে গুলি করে হত্যা করা হয় গ্রেনেড বাবু গ্রুপের আরেক সদস্য কালা রনিকে। এ হত্যায় সন্দেহজনক হিসেবে সাব্বিরের নাম আলোচিত হয়। প্রাথমিক তদন্তে মাদকসংক্রান্ত দ্বন্দ্বে কালা রনিকে হত্যার কথা জানান রূপসা থানার ওসি মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান। এ ছাড়া ১৫ মার্চ রাতে বাগমারা ব্রিজের কাছে সন্ত্রাসীদের গুলিতে চরমপন্থি নেতা শাহীন নিহত হন। তার বিরুদ্ধে দৌলতপুরে শহীদ ওরফে হুজি শহীদ হত্যা মামলাসহ ১০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে হত্যা, পাল্টা হত্যার ঘটনা ঘটছে। অনেক মামলার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। পুলিশের অভিযানে সন্ত্রাসীরা গ্রেপ্তার হলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে অপরাধের রাজ্যে সক্রিয় হয় শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। দেশের বাইরে কিংবা ভিতরে আত্মগোপনে থেকেও অপরাধের সাম্রাজ্য পরিচালনা করে। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, খুলনায় মূলত মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি ও দখলবাজি নিয়ে খুনাখুনির ঘটনা ঘটছে।

জানা যায়, গত ১১ মাসে নগরীতে ৩০টির বেশি হত্যাকা- ঘটেছে। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ মাদক আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে হত্যা-পাল্টা হত্যার ঘটনা। ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর ১১ মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী আশিকুজ্জামান রাসেল ওরফে পঙ্গু রাসেল (২৭) দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন। একই বছরের ৩০ জানুয়ারি ময়লাপোতা মোড়ে বিহারি রানা গুলিতে নিহত হন। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর এলাকায় ফিরলে তিনি টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হন।

এদিকে খুলনা নগরীতে অপরাধ তৎপরতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত) খন্দকার হোসেন আহমেদ জানান, অপরাধীদের গতিবিধি নজরদারিতে রয়েছে। প্রতিটি হত্যার পর দ্রুতই আসামিদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকা করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিাতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।

সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।