ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ আশ্বিন ১৪৩২, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

যোগাযোগে নতুন দিগন্ত

ছয় মেট্রো স্টেশন ঘেরা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:৩৯, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫
ছয় মেট্রো স্টেশন ঘেরা ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা শহর যেন প্রতিদিনই যানজটের জটিল জালে আটকে পড়ছে। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে সময়ের চেয়ে ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয় বেশি।

তবে রাজধানীর উত্তর-পূর্ব প্রান্তে গড়ে ওঠা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ভিন্ন এক চিত্র তুলে ধরছে। প্রশস্ত সড়ক, আধুনিক পরিবহনব্যবস্থা, ছয়টি মেট্রো স্টেশনের সংযোগ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আর বিমানবন্দরের কাছাকাছি অবস্থান—সব মিলিয়ে এই আবাসন প্রকল্প যেন হয়ে উঠছে ঢাকার নতুন ‘সেন্টার অব কানেক্টিভিটি’।

শুধু আবাসিক সুবিধা নয়, এখানকার পরিবহন নেটওয়ার্কই বসুন্ধরাকে আলাদা করছে রাজধানীর অন্যান্য আবাসন প্রকল্প থেকে।

প্রকল্পের উত্তর দিকে রয়েছে ৩০০ ফিট সড়ক ও ২০০ ফিট লেকসংবলিত এক্সপ্রেস হাইওয়ে। দক্ষিণে চার লেনবিশিষ্ট ১২০ ফিট মাদানি এভিনিউ। প্রকল্পের অভ্যন্তরে প্রতিটি প্লটের সামনে কমপক্ষে ২৫ ফিট রাস্তা।

এ ছাড়া রয়েছে ২০০ ফিট, ১৩০ ফিট, ১০০ ফিট, ৮০ ফিট, ৬০ ফিট, ৫০ ফিট ও ৪০ ফিটের সড়ক নেটওয়ার্ক। বসুন্ধরা থেকে কুড়িল এক্সপ্রেসওয়েতে যেতে লাগে দুই মিনিট আর বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালে যেতে পাঁচ থেকে সাত মিনিট।

বসুন্ধরা ঘিরে ৬ মেট্রো স্টেশন : রাজধানীর যোগাযোগব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে স্মার্ট সিটি বসুন্ধরা। এমআরটি-১ ও এমআরটি-৫ প্রকল্পের আওতায় এখানে নির্মিত হচ্ছে ছয়টি মেট্রো স্টেশন—ভাটারা, নতুনবাজার, নদ্দা, জোয়ারসাহারা, বসুন্ধরা ও মস্তুল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এসব স্টেশন চালু হলে বসুন্ধরার সঙ্গে ঢাকার সব প্রান্তে দ্রুত ও সহজ যোগাযোগ নেটওয়ার্ক তৈরি হবে। এতে যানজটমুক্ত ও সময়সাশ্রয়ী যাতায়াত সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা শুধু একটি পরিকল্পিত জনপদই নয়, বরং রাজধানীর ‘সেন্টার অব কানেক্টিভিটি’ বা যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।

রিকশার পরিবর্তে শাটল সার্ভিস: রাজধানীতে রিকশার বাড়তি ভাড়া সব সময়ই ভোগান্তির কারণ। অল্প পথ গেলেও ৫০ থেকে ৭০ টাকা দিতে হয়।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ক্ষেত্রে ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে বৈদ্যুতিক শাটল বাস সার্ভিস।
শাটল সার্ভিসে খুশি স্কুল শিক্ষার্থীরা। একসঙ্গে ১০ থেকে ১২ জন বসতে পারে এই বাহনে। রিকশায় যেখানে ৪০ থেকে ৫০ টাকা ভাড়া, সেখানে শাটল বাসে ভাড়া মাত্র ১০ টাকা। এটি পরিবেশবান্ধব, আরামদায়ক এবং নিরাপদও বটে। জাইমা নিদাত জাফরা নামের শিক্ষার্থী জানান, ‘রিকশায় যেতে ৪০ টাকার বেশি লাগে, কিন্তু শাটল বাসে মাত্র ১০ টাকা। এ ছাড়া অনেকজন একসঙ্গে উঠতে পারায় নিরাপত্তাও বেশি। ’

অভিভাবক নাজমা আক্তার বলেন, ‘ভাড়াসাশ্রয়ী ঠিকই, তবে বড় আকারে চালু না হলে সুফল পুরোপুরি মিলবে না। আশা করি, শিগগিরই শাটল বাস সার্ভিসের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এতে বসুন্ধরার যাতায়াতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। ’

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে বসুন্ধরার ৩০০ ফিট মুখ থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের পকেট গেট পর্যন্ত দুটি শাটল বাস চলছে। প্রতিটি বাসে ছয়টি ব্যাটারি রয়েছে, যা একবার চার্জে প্রায় ৮০ কিলোমিটার চলতে পারে। শিগগিরই গাড়ির সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে।

বসুন্ধরা গ্রুপের ডিএমডি ও হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) বিদ্যুৎ কুমার ভৌমিক বলেন, ‘যেকোনো শহরের বাসিন্দারা প্রথমেই চান এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় দ্রুত যাতায়াত করতে। আমাদের যানজটের শহরে এটি আরো গুরুত্বপূর্ণ। ওইভাবে চিন্তা করলে বসুন্ধরা নাম্বার ওয়ান। কারণ শুধু ইন্টারনাল নেটওয়ার্কের কথাই যদি ভাবেন—প্রতিটি বাসার সামনে ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুল্যান্স যেতে পারে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক সুবিধা। আমাদের এখানে যদি ৫০ হাজার প্লট হয়, সব প্লটের সামনেই ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুল্যান্স যাওয়ার মতো রাস্তা রয়েছে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘আবাসনের ভেতরে সর্বনিম্ন ২৫ ফিট এবং সর্বোচ্চ ২০০ ফিট সড়ক রয়েছে। প্রগতি সরণিতে যেখানে ১০০ ফিট রাস্তা, আমাদের অভ্যন্তরীণ রাস্তাই সেখানে ২০০ ফিট। উত্তরে রয়েছে ৩০০ ফিট সড়ক ও ২০০ ফিট লেকসহ প্রায় ৫০০ ফিট খোলা জায়গা। দক্ষিণে ১২০ ফিট মাদানি এভিনিউ দিয়ে ঢাকা শহরের যেকোনো জায়গায় যাওয়া যায়। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কুড়িল সংযোগে বসুন্ধরা থেকে যেতে সময় লাগে মাত্র দুই-তিন মিনিট। সেখানে উঠে গেলে ভবিষ্যতে দক্ষিণ থেকে উত্তর কিংবা উত্তর থেকে দক্ষিণে যেতে সময় লাগবে মাত্র ২০ থেকে ২৫ মিনিট। বিমানবন্দর কাছেই, যানজট না থাকলে পাঁচ থেকে সাত মিনিটে পৌঁছানো যায়। এ ছাড়া আমেরিকান এমবাসি, গুলশান, বনানীও খুব কাছাকাছি। নতুন শহরের দিকে জলসিঁড়ি নদীর এপার-ওপারও সহজেই যুক্ত হবে। সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পূর্বাচলেও মাত্র পাঁচ মিনিটে যাওয়া যায়। সব মিলিয়ে বসুন্ধরার সড়ক ব্যবস্থাপনা অন্য কোনো আবাসনে নেই। ’

সূত্র: কালের কণ্ঠ

এনডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।