হয়রানি ও নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সারা দেশে তিনটি অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট।
মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) দুদক সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনসিটিবি কার্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে বিভিন্ন দপ্তর পরিদর্শন এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে প্রাসঙ্গিক রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়।
প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণে নানা অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে। বিশেষ করে নিম্নমানের কাগজ ব্যবহার, মুদ্রণ মানের ঘাটতি, বাঁধাই ত্রুটি এবং কিছু মুদ্রণ প্রেসের মালিকদের সঙ্গে অসাধু যোগসাজশের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে বলে অভিযানকারী টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে এনফোর্সমেন্ট টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
অন্যদিকে, ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা প্রদানে হয়রানি ও নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঝিনাইদহ হতে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে ওই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার, জরুরি বিভাগ, ওয়ার্ড, ক্যান্টিনসহ হাসপাতালের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করা হয়।
পরিদর্শনকালে জানা যায়, হাসপাতালটিতে ২০ জন চিকিৎসক পদের বিপরীতে মাত্র ৪ জন চিকিৎসক কর্মরত আছেন। অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তার ও গাইনি কনসালটেন্ট না থাকায় সিজার কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। অভিযানকালে হাসপাতালের জেনারেটরটি নষ্ট অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ছাড়া হাসপাতাল প্রাঙ্গণে পরিচ্ছন্নতার ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়। সংগৃহীত তথ্যাবলি পর্যালোচনা করে টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
এছাড়া ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বিদ্যালয়ে সংস্কার ও অন্যান্য খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ফরিদপুর হতে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে সালথা উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামত, ইমারজেন্সি মেরামত ও ভোটকেন্দ্র স্থাপনসংক্রান্ত মেরামতের রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়। জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট পূর্বতন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার পূর্বে উক্ত মেরামত সংক্রান্ত কোনো রেকর্ডপত্র অফিসে বুঝিয়ে দেননি।
অভিযানকালে আরও জানা যায়, ওই শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান রেকর্ডপত্র প্রায়ই নিজ বাসায় নিয়ে যেতেন এবং সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বাসা থেকেই পরিচালনা করতেন। এক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির আভাস রয়েছে বলে এনফোর্সমেন্ট টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। অভিযোগের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল রেকর্ডপত্র পর্যালোচনাপূর্বক টিন কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এসএমএকে/এমজেএফ