ঢাকা: রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রেলওয়ের জমি দখল করে গড়ে উঠা ট্রাকস্ট্যান্ড এখনও সরিয়ে নিচ্ছে না মালিকপক্ষ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অবৈধভাবে স্থাপিত ট্রাকস্ট্যান্ডগুলো সরানোর দাবি জানিয়ে আসছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
তাদের দাবির প্রেক্ষিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র কঠোর অবস্থান নিলে শুধু সড়ক থেকে ট্রাক সরিয়ে কাজ সেরেছেন মালিকরা। কিন্তু স্ট্যান্ড আগের জায়গাতেই রয়ে গেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর সাতরাস্তা থেকে ফার্মগেটমুখী সড়কের পাশে সারি সারি ট্রাক রাখা হয়েছে। আর ভেতরে রেলওয়ের জমিতে দীর্ঘদিন ধরে ট্রাকস্ট্যান্ড স্থাপন করে ব্যবহার করছেন ট্রাক মালিকরা। এতে কয়েক বছর ধরে সড়কটিতে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে বুধবার (১১ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড ঘিরে এর আশপাশে আরও প্রায় অর্ধশত মেরামত কারাখানা গড়ে ওঠেছে। এতে পরিবেশ দূষিত হওয়ার পাশাপাশি নানা ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ।
ট্রাক মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা বলছেন, রাস্তা ফাঁকা করে দেওয়া হচ্ছে। তবে এখনই স্ট্যান্ড থেকে ট্রাক সরানো হচ্ছে না। অন্য কোথাও রাখার ব্যবস্থা করে পরে সরানো হবে।
পথচারী ও স্থানীয় লোকজন জানান, তেজগাঁও রাজধানীর একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প এলাকা। এখানকার সড়কগুলোতে ট্রাকের বেপরোয়া দৌরাত্মের কারণে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। অনেক সময় বড় দুর্ঘটনাও ঘটে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহকারী অধ্যাপক সাইফুন নেওয়াজ বাংলানিউজকে বলেন, একটি আদর্শ নগরীতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের ট্রাক স্ট্যান্ড থাকতে পারে না। কিন্তু ঢাকায় এসব ট্রাক স্ট্যান্ড বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে।
‘নগরীতে মালামাল আনা নেওয়া এবং লোড ও আনলোডিং স্থানটি এমনভাবে নির্ধারণ করেতে হবে যাতে অন্যান্য ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও চলাচলে বাধা সৃষ্টি না হয়। আর পরিবেশেরও যেন কোনো ক্ষতি না হয় সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। ’
এছাড়া ভারি যান চলাচলের কারণে নগরীর সড়কের ক্যাপাসিটিও নষ্ট হয়ে যায় বলে মনে করেন তিনি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ টেনে বুয়েটের এই শিক্ষক বলেন, ‘নগরীর বাইরে পণ্যবাহী ট্রাকের মালামাল আনার পর ছোট যানে করে তা বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ’
‘তবে ট্রেনে পণ্য আনা-নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে করা গেলে সবচেয়ে ভালো হয়। কমলাপুর স্টেশনে এসব পণ্য খালাস করে নির্দিষ্ট জনের কাছে পৌঁছিয়ে দেওয়া যেতে পারে,’ বলেন সাইফুন নেওয়াজ।
বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রুস্তম আলী খান বাংলানিউজকে বলেন, ফার্মগেটমুখী সড়কে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে শ্রমিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনেকেই সরিয়ে নিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
তবে ট্রাক স্ট্যান্ড সরানোর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন রুস্তম আলী।
স্ট্যান্ডে দেখা যায়, প্রায় একশ’র মতো ট্রাক বিকল অবস্থায় স্ট্যান্ডে পার্কি করে রাখা হয়েছে। যার বেশির ভাগই ৭ থেকে ১০ বছরের বেশি পুরানো বলে জানিয়েছেন সংশ্টিরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৫
এসএ/এমএ