ঢাকা: দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রায় দুই বছর আগে গঠন করা হয় ট্যুরিস্ট পুলিশ। ছোট পরিসরে শুরু হলেও বর্তমানে এই বাহিনী দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় কার্যক্রম শুরু করেছে।
আধুনিক প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম কাজে লাগিয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই দলের সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার (এসপি-এডমিন ও ফিন্যান্স) সরদার নুরুল আমিন।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, দেশি ও বিদেশি সব পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ট্যুরিস্ট পুলিশের। তবে বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তায় একটু বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। মানুষ দেশ-বিদেশ থেকে অর্থ ব্যয় করে বিনোদন নিতে আসবেন, তারা যেন সুষ্ঠুভাবে ও নিরাপদ বোধ করে ঘুরতে পারেন সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করাই আমাদের অন্যতম লক্ষ।
সরদার নুরুল আমিন আরো বলেন, বিদেশি পর্যটকরা যে সব ট্যুর অপারেটরের মাধ্যমে বাংলাদেশে বেড়াতে আসেন, সেই সব ট্যুর অপারেটররা পর্যটকদের যে কোনো নিরাপত্তা চাইলে আমরা যথাযথ সহযোগিতা করে থাকি। একই সঙ্গে সব ট্যুর অপারেটর ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমাদের পক্ষ থেকে আহ্বান থাকবে, নিরাপত্তার প্রয়োজনে তারা যেন ট্যুরিস্ট পুলিশকে অবহিত করেন, আমরা প্রস্তুত আছি।
২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশে ট্যুরিস্ট পুলিশের যাত্রা শুরু হয়। একজন ডিআইজি, একজন এসপি ও কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সমন্বয়ে যাত্রা শুরু করে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
প্রথমে পুলিশ সদর দপ্তরের মাত্র দু’টি রুম নিয়ে কাজ শুরু করে ট্যুরিস্ট পুলিশ। বর্তমানে রাজধানীতে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদর দপ্তর, ঢাকা ডিভিশনের কার্যালয়, ঢাকা জোনের কার্যালয়, ফোর্স ব্যারাক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
এছাড়া কুয়াকাটা জোন, মৌলভীবাজার জোন, সিলেট জোন, চট্টগ্রাম ডিভিশন, চট্টগ্রাম জোন, কক্সবাজার জোনের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার সরদার নুরুল আমিন জানান, বর্তমানে ট্যুরিস্ট পুলিশের জনবল ৬৯৯ জন। এর মধ্যে মাঠ পর্যায়ে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ৫৫০ জন কাজ করে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে পর্যটন বর্ষ পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন। সেই লক্ষে ট্যুরিস্ট পুলিশের জনবল আরো ৭০০ জন বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
জনবল বৃদ্ধির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পর্যটন স্পট ও সুন্দরবনসহ দেশের অন্যান্য পর্যটন এলাকা ট্যুরিস্ট পুলিশের আওতায় আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে জানান সরদার নুরুল আমিন।
ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. রেজাউল করিম বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ওয়াটার বাইক, স্পিড বোট, বালুর উপর দিয়ে দ্রুতগতিতে চলাচল উপযোগী যানবাহন ব্যবহার করে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটকরা যখনই আমাদের কাছে সহায়তা চায়, গুরুত্বের সঙ্গে তাদের সহযোগিতা করা হয়।
এএসপি (প্রশিক্ষণ ও গবেষণা) মো. আলমগীর কবির বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রত্যেক সদস্যই দক্ষ। কারণ এই দলে যোগদানের পর সদস্যদের কর্মক্ষমতা ও কর্মদক্ষতা উন্নয়ন এবং ওরিয়েন্টেশন কোর্স করানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৫
টিএইচ/আরএ/জেডএম