ভোলা: তেতুলিয়া নদীর শাখা খালের উপর নির্মিত ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যের ব্রিজ দিয়ে চলাচল ছিল আশপাশের কয়েক গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষের।
কিন্তু ভোলা সদরের ভেলুমিয়া ইউনিয়নের জরাজীর্ণ চরগাজী ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার দেড় বছর পার হলেও এখনো তা মেরামত বা পুনঃনির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তিন গ্রামের শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৩০ হাজার মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তেতুলিয়া নদীর শাখা খালের ওপর নির্মিত ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যের ও ১২ ফুট প্রস্থের চরগাজী ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে। শুধু দুই পাশের কিছু অংশ টিকে আছে। এতে চন্দ্রপ্রসাদ থেকে চরগাজী দুই গ্রামের সড়ক পথের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বাধ্য হয়ে তাই এলাকাবাসী বিকল্প ব্যবস্থায় নৌকা দিয়ে পারাপার হলেও মালবাহী কোনো পরিবহন পারাপার হতে পারছে না। এতে সদর থেকে বিভিন্ন কাঁচামাল পরিবহন হচ্ছে না। মালামাল আনতে গেলে ৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে।
এদিকে, খেয়া পার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা রয়েছে চরম বিড়ম্বনার মধ্যে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০১ সালে ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চরগাজী, চন্দ্রপ্রসাদ ও কুলগাজী গ্রামের সংযোগস্থলে তেতুলিয়ার শাখা খালের ওপর চরগাজী ব্রিজ নির্মিত হয়।
এরপর থেকে ব্রিজটি আর সংস্কার করা হয়নি। গত ঘূর্ণিঝড় ও আইলায় ব্রিজের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে ২০১৪ সালের ২৬ জুন দ্বিখণ্ডিত হয়ে নদীতে বিলীন হয়ে যায় ব্রিজটি। ফলে পথচারী ও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ভেলুমিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আসমা আক্তার বলেন, এটি নির্মাণ না করলে মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না। এজন্য সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।
চরগাজী গ্রামে দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তিনটি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের চন্দ্র প্রসাদ গ্রাম থেকে পড়ালেখার জন্য চরগাজী গ্রামে যেতে হয়। আবার চরগাজী থেকে চন্দ্র প্রসাদ গ্রামে আসতে হয়। ফলে প্রতিনিয়ত তাদের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পার হতে হচ্ছে।
টেম্পু চালক জহিরুল ইসলাম জানান, ভেলুমিয়া থেকে সবজিসহ বিভিন্ন কাঁচাপণ্য পরিবহন হচ্ছে জেলা সদরে। আবার জেলা সদর থেকে ব্যবসায়ীরা মালামাল নিয়ে বিক্রি করছেন গ্রামে। এসব মালামাল পরিবহনের জন্য চরগাজী ব্রিজটি মানুষের একমাত্র ভরসা। কিন্তু ব্রিজ ভেঙে পড়ায় ৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হচ্ছে তাদের।
ভেলুমিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালাম মাল বলেন, ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করা দরকার।
এ বিষয়ে ভোলা এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, ব্রিজটি মেরামতের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো আদেশ আসেনি। এলে খুব দ্রুত মেরামত করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৫
এসআর
.jpg)
