ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঐশীর মৃত্যুদণ্ডে অসন্তুষ্ট পরিবার, আপিল করবেন

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৫
ঐশীর মৃত্যুদণ্ডে অসন্তুষ্ট পরিবার, আপিল করবেন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: বাবা-মাকে হত্যার দায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছে একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানের। আদালতের এ রায়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

বড় ছেলে আর পুত্রবধূকে হারানোর পর এবার আদরের নাতনি এ পরিণতিতে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন নিহত পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমানের বৃদ্ধা মা ও ঐশীর দাদী মোকছেদা খাতুন (৭০)।

বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে এসবি’র পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায়ে তাদের একমাত্র মেয়ে ঐশীকে ডাবল ফাঁসির আদেশ দেন ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ।
oishi_Jony_bg1
এ রায়ের পর উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই হত্যা মামলার বাদী মশিউর রহমান।

ঐশীর গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের মরাগাংকান্দায় গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায়নি। এ বাড়িতে তালা ঝুলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

এরপর প্রথমে বেশ কয়েক দফা মুঠোফোনে ঐশীর চাচা মশিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া দেননি তিনি। পরে বাংলানিউজের অনুরোধে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমরা ভালো নেই। ঐশীর ফাঁসির রায়ের পর থেকেই আমার আম্মার অবস্থা খুব খারাপ। বার বার সেনসলেস হচ্ছেন।

এ রায়ে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ঐশী সরাসরি জড়িত নয়। ও অপ্রাপ্তবয়স্ক। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ওকে ফাঁসানো হয়েছে। প্লিজ, এখন আর কথা বলতে পারবো না। একটু পরে ফোন করেন।
 
বাংলানিউজের সঙ্গে মুঠোফোনে সংক্ষিপ্ত কথা বলে ফোন কেটে দেওয়ার পর আরো কয়েক দফা চেষ্টা করলে অবশেষে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন মশিউর। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

তবে হালুয়াঘাট উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তিনি প্রকৃত খুনিদের কঠোর শাস্তির পাশাপাশি এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথাও জানান। দু’টি ফোনালাপে বোঝা গেছে, এ রায়ে অসন্তুষ্ট ঐশীর পরিবারের সদস্যরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঐশীর ছোট ভাই ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ঐহী রহমান কোচিং করছে নগরীর নতুন বাজার এলাকার সানশাইন কোচিং সেন্টারে।
oishi_prison_van
বিকেলে সেখানে গেলে আলাপ হয় ঐশীর মামাতো বোন ও সংশ্লিষ্ট কোচিং সেন্টারের পরিচালক সাফিয়া তাসরিন লিপার সঙ্গে। চিন্তাক্লিষ্ট মুখায়ব নিয়ে তিনি বলেন, রায় হয়েছে কি-না, এটা আমার জানা নেই। তবে মশিউর মামা দুপুরের আগেই ঐহীকে কোচিং সেন্টার থেকে বাসায় নিয়ে গেছেন। তারা নওমহল এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।

কিন্তু গোটা নওমহল এলাকায় খুঁজেও তাদের সেই বাসা পাওয়া যায়নি। এরপর সানশাইন কোচিং সেন্টারের পিয়ন মো: আকরাম সাঈদ তথ্য দেন, ঐহী ও তার দাদীকে নিয়ে তার চাচা মশিউর সারদা ঘোষ রোডের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। অত:পর তাকে সঙ্গে নিয়ে সেই বাসায় গেলে অন্য ভাড়াটিয়ারা জানান, এখানে এ নামে কেউ থাকে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা নভেম্বর ১২, ২০১৫
এএসআর

** বাবা-মা হত্যার দায়ে ঐশীর ফাঁসি
** ঐশীদের বিরুদ্ধে মামলার রায় দুপুর ১২টায়
** ঐশীদের বিরুদ্ধে মামলার রায় বৃহস্পতিবার

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।