গাজীপুর: গাজীপুরের দক্ষিণ সালনায় হত্যাকাণ্ডের প্রায় দেড় বছর পর পরিত্যক্ত ডোবা থেকে বোরহান খালাসি নামে এক ব্যক্তির কংকাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে দক্ষিণ সালনার ফজলুল হকের বাড়ি সংলগ্ন মুন্নি লালের পরিত্যক্ত পুকুর থেকে এ কংকাল উদ্ধার করা হয়।
জয়দেবপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আবুল হাসেম বাংলানিউজকে জানান, পরকীয়ার জের ধরে গত বছর ওই হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। সে মামলায় গ্রেফতার নান্নুর তথ্য অনুসারে পুকুরটি সেঁচে বোরহান খালাসির কংকাল উদ্ধার করা হয়েছে।
এসআই বলেন, মাদারীপুরের পাঁচখোলার বাসিন্দা নান্নুর স্ত্রী চার সন্তানের জননী রেবা বেগমের (৪০) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গ্রামের আ. জব্বার খালাসির ছেলে বোরহান খালাসির পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের সূত্র ধরে ২০১৪ সালের প্রথম দিকে বোরহান খালাসির সঙ্গে পালিয়ে গাজীপুর চলে আসেন বেবা। তারা দক্ষিণ সালনায় ফজলুল হকের বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করতে থাকেন। এসময় দু‘জনেই দিন মুজুরের কাজ করতে থাকেন। কিছুদিন পর তাদের মধ্যে কলহ বাধলে রেবা তার স্বামী নান্নু শেখকে খবর দেন এবং তাকে গাজীপুর থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন।
এসআই জানান, পরে নান্নু তার সহযোগীদের নিয়ে গত বছরের ২৮ এপ্রিল রাতে দক্ষিণ সালনায় ফজলুল হকের ভাড়া বাসায় আসেন। এরপর কৌশলে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে বোরহান খালাসিকে হত্যা করেন। হত্যার পর বোরহান খালাসির বুকে-পিঠে ইট ও ইটের খোয়া ভর্তি বস্তা বেঁধে পার্শ্ববর্তী মুন্নি লালের পরিত্যক্ত ডোবায় ফেলে দেন তারা। পরে ওই রাতেই নান্নু ও তার স্ত্রী রেবা অন্যত্র চলে যান।
সৈয়দ আবুল হাসেম আরও জানান, প্রায় দেড় বছর পর নান্নু তাদের গ্রামের বাড়িতে গেলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে স্ত্রী রেবা এবং বোরহান খালাসির সন্ধান চায়। এক পর্যায়ে তিনি বোরহান খালাসিকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন। এরপর স্থানীয়রা তাকে মাদারীপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পুলিশ তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। এই প্রেক্ষিতে বোরহান খালাসির ভাগ্নে আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ১১ অক্টোবর গাজীপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ১৫ অক্টোবর জয়দেবপুর থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়।
পরে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে নান্নুকে মাদারীপুর থেকে গাজীপুরে নিয়ে আসে এবং এ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখায়। পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে গাজীপুর আদালতে নান্নুর সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন নান্নু। রিমান্ডে দেওয়া তথ্য অনুযায়ীই শুক্রবার মুন্নি লালের পরিত্যক্ত পুকুর সেঁচে কংকালটি উদ্ধার করা হয়।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা বাংলানিউজকে জানান, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। গ্রেফতার নান্নু শেখের স্ত্রী রেবা বেগমকেও ধরতে অভিযান চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৫
এইচএ/