ঢাকা: স্বাধীনতাবিরোধী যে কোনও চক্রান্ত মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতা যুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তি- যোদ্ধাদের ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা এবং ২০১৪-২০১৫ সালে সশস্ত্র বাহিনীর শান্তিকালীন সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী পদক এবং অসামান্য সেবা পদকপ্রাপ্ত সদস্যদের পদক প্রদান অনুষ্ঠানে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে শিখা অনির্বাণে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে শনিবার (২১ নভেম্বর) সকালে ঢাকা ক্যান্টমেন্টে এসব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সবাইকে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে স্বাধীনতা পেয়েছে। আমরা বিজয় অর্জনকারী দেশ। সব সময় বিশ্ব দরবারে আমরা মাথা উঁচু করে চলবো, কারো কাছে মাথা নিচু করে নয়। সে আত্মবিশ্বাস নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে।
এসময় মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানি ভাতা পাঁচ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হবে এই ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতার পরিমাণ ৯০০ টাকা থেকে চার দফা বাড়িয়ে বর্তমান ৫,০০০ টাকা করা হয়েছে। ভাতা ভোগীর সংখ্যা এক লাখ থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৯৬ থেকে ২০০১ এ যখন ক্ষমতায় ছিলাম তখনও এক দফা বৃদ্ধি করেছিলাম। আবার ২০১৩ সালে আমরা বীরশ্রেষ্ঠদের জন্য ১২ হাজার, বীর উত্তমদের জন্য ১০ হাজার এবং বীর বিক্রমদের জন্য ৮ হাজার এবং বীর প্রতিকদের জন্য ৬ হাজার টাকায় উন্নিত করেছি।
মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্টের মাধ্যমে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গের মাসিক রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ৯,৭০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৩০,০০০ টাকা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা প্রাপ্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার ও মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গকে স্বল্পমূল্যে রেশন সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ভাতা, চিকিৎসা এবং রেশন সামগ্রী বাবদ প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং উত্তরাধিকারীদের রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতার আওতায় আনার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে।
সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধানগণ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকাররা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের ডাটাবেজ করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ডাটাবেজ করা এবং সেই সাথে তাদের সনদ ৯টি নিরাপত্তা বার কোড সহ সনদ প্রদানের বিষয়টি আমরা বিবেচনা করছি। যাতে ভবিষ্যতে কেউ তাদের নাম মুছে ফেলতে না পারে।
গত চার বছরে দেশ এগিয়ে যাওয়ার নানা দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যখন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সামনে নিয়ে সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছি, সেই মুহুর্তেই একটি চিহ্নিত মহল দেশকে পিছিয়ে দেয়া ও সকল অর্জন ধ্বংস করায় লিপ্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, এদের চক্রান্ত রুখে দেয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশের সকল নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গঠনে যার যার অবস্থান থেকে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
বাংলাদেশ সময় ১০৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫
এমএমকে