ফরিদপুর: মানবতাবিরোধী আপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের নিজ জেলা ফরিদপুরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. জামিল হাসান শনিবার (২১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তার বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আদালত যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেটা কার্যকর হবে।
তিনি বলেন, মুজাহিদের বাড়ি ফরিদপুর হওয়ায় পুরো জেলায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অতিরিক্ত আমর্ড পুলিশ আনা হয়েছে। পাশের জেলাগুলো থেকেও কয়েকশ’ অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যকে এনে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটিতে (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব) থাকা নেতা হিসেবে গণহত্যা সংঘটিত করা, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করা, হত্যা, নির্যাতন, বিতাড়ন ইত্যাদি ঘটনার দায়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে যাচ্ছেন মুজাহিদ। সরকারের (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) নির্বাহী আদেশ পেয়ে ফাঁসির মঞ্চ ও জল্লাদদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রেখেছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। ফাঁসিতে ঝোলানোর জন্য স্বাস্থ্যগত পরীক্ষাও (মেডিকেল চেকআপ) সম্পন্ন হয়ে গেছে তার।
এদিকে ফাঁসির আগে সর্বশেষ সুযোগ হিসেবে অপরাধ স্বীকার করে ও প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করেছেন মুজাহিদ।
ফলে প্রাণভিক্ষা নাকচ হলে ফাঁসি কার্যকর এখন চূড়ান্ত ক্ষণে পৌঁছেছে।
এ ফাঁসি কার্যকর ও নিজ জেলায় মুজাহিদের মরদেহ ঢোকা নিয়ে নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে ফরিদপুর জেলাজুড়ে।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের এসপি জামিল হাসান বলেন, অনেকের মনে ক্ষোভ থাকতে পারে। কিন্তু জেলায় কোনো ধরনের নাশকতা বা অস্থিতিশীলতা সৃস্টির স্বপ্ন কেউ যদি দেখে সে স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ফরিদপুর প্রশাসন ও এই জেলার মানুষ কোনো ধরনের নাশকতা মেনে নেবে না।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের অতিরক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
দেশের শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের পৈত্রিক বাড়ি ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুরে। ফাঁসির পরে মুজাহিদের মরদেহ তার বাড়িতে আনার সিদ্ধান্ত থাকলেও সেখানে দাফনের বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
মুজাহিদের ছোট ভাই আলী আফজাল মোহাম্মদ খালেছ মোবাইলে বাংলানিউজকে জানান, আমাদের বাড়িটি শরিকদের মাঝে এমনভাবে ভাগ হয়েছে যে, পারিবারিক কবরস্থান বলতে সেরকম কিছু নেই। মুজাহিদের স্ত্রী-সন্তানরা যদি চান, তাহলে মরদেহ ফরিদপুরে আনা হবে দাবি করে তিনি জানান, সেক্ষেত্রে শহরের আলীপুর গোরস্থানে তার মা নূরজাহান খানমের কবরের পাশে দাফন করা হতে পারে।
ফরিদপুরবাসী অবশ্য ঘোষণা দিয়েছেন, তারা মুজাহিদের মরদেহ ফরিদপুরে ঢুকতে দেবেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫
আরকেবি/এএসআর