ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পঞ্চগড়ে বিলুপ্ত ছিটমহলের ৫৫ জন ভারতে যাচ্ছেন রোববার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫
পঞ্চগড়ে বিলুপ্ত ছিটমহলের ৫৫ জন ভারতে যাচ্ছেন রোববার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দাদের মধ্যে ট্রাভেল পাসধারী ১৫ পরিবারের ৫৫ জন ভারতে যাচ্ছেন রোববার।  
 
শনিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে জেলার বোদা উপজেলার কাজলদীঘি কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে জেলা প্রশাসন, বিজিবি ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ভারতগামীদের চেকিং সম্পন্ন হয়েছে।


 
এ সময় পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেড মোহাম্মদ গোলাম আযম, বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু আওয়াল, পঞ্চগড় কাস্টমসের সহকারী কমিশনার দেলোয়ার হোসেন, নীলফামারী কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ হুমায়ুন হাফিজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
 
সদর উপজেলার সদ্য বিলুপ্ত গাড়াতি, বোদা উপজেলার নাজিরগঞ্জ, নাটকটোকা, বেহুলা ডাঙ্গা ছিটমহলের ১৫টি পরিবারের ৫৫ জন ভারতগামী তাদের ভারতীয় পরিচয়পত্রসহ মাল-পত্র নিয়ে কাজলদীঘি কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চত্বরের অস্থায়ী ক্যাম্পে রাতযাপন করবেন।  
 
রোববার সকালে জেলা প্রশাসন ও বিজিবির মাধ্যমে গাড়িতে করে তাদের নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ডাঙ্গাপাড়া বিজিবির কাছে পৌঁছানো হবে। পরে ডাঙ্গাপাড়া বিজিবি কর্তৃপক্ষ চিলাহাটি-হলদিবাড়ী সীমান্ত দিয়ে ভারতের খালপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের হস্তান্তর করবেন।  
 
নতুন ভারতীয়দের গ্রহণ করতে ভারতের কোচবিহার প্রশাসন চিলাহাটি-হলদিবাড়ী সীমান্তে ভারতের খালপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প ও বাংলাদেশের ডাঙ্গাপাড়া বিজিবি ক্যাম্প এলাকার নোম্যান্স ল্যান্ডে ১৫০ গজের একটি নতুন রাস্তা তৈরি করেছে। এছাড়া, বিএসএফ সদস্যরা সীমানার অভ্যন্তরে একটি তোরণ ও একটি মঞ্চ তৈরি করেছে।
 
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, একইভাবে ২৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় দেবীগঞ্জের কোটভাজনী ও বালাপাড়া খাগড়াবাড়ী ছিটমহল থেকে ৩১টি পরিবারের ১৭৭ জন স্থায়ীভাবে একই পথে ভারত যাবেন। ২৪ নভেম্বর দেবীগঞ্জ উপজেলার দহলা খাগড়াবাড়ী ছিটমহলের ২৯টি পরিবারের ১৪৯ জন এবং ২৬ নভেম্বর দেবীগঞ্জ উপজেলার দহলাখাগড়াবাড়ী ও বোদা উপজেলার দইখাতা ছিটমহলের ২৩টি পরিবারে ১০৮ জন ভারতীয় নাগরিক একই পথে ভারতে যাবেন।  
 
চলতি বছরের ৬ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত জনগণনায় পঞ্চগড় জেলার ৩৬ ছিটমহলের ৪৮৭ জন ছিটমহলের বাসিন্দা ভারতে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন। জনগণনার পর দেবীগঞ্জ উপজেলার কোটভাজনি এলাকার লাল চান রায়ের ছেলে ভারত চন্দ্র ও একই উপজেলার দহলা খাগড়াবাড়ি ছিটমহলের রতন চন্দ্র রায়ের সদ্য মেয়ে অষ্টমী রানীর জন্ম হওয়ায় ভারতগামীদের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৮৯ এ।  
 
৩১ জুলাই মধ্যরাতে বাংলাদেশ-ভারতের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২টি ছিটমহল আনুষ্ঠানিকভাবে বিনিময় হয়। এরপর অনেকে তাদের মত পরিবর্তন করে বাংলাদেশে থেকে যাওয়ার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আবেদন করে। দু’দেশের বৈঠকে ছিটমহলবাসীর আবেদন গ্রহণ করা হয়।  
 
এছাড়া, ভারতে যেতে ইচ্ছুক ৪৮৭ জনকে ভারতীয় ট্রাভেল পাস দেওয়া হয়। এসব ভারতীয় নাগরিক তাদের সম্পত্তি বিক্রি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভারতে চলে যাচ্ছেন।
 
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম আজম বাংলানিউজকে বলেন, ভারতে যেতে ৪৮৭ জন আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এরই মধ্যে দুই শিশু জন্ম নেওয়ায় তাদের সংখ্যা ৪৮৯ জনে দাঁড়িয়েছে। চার দফায় নতুন ভারতীয় নাগরিকদের ভারতে পাঠানো হবে।
 
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, পঞ্চগড় জেলার ৩৬ ছিটমহলের ৯৮টি পরিবারের ৪৮৯ সদস্য চার দফায় ভারতে যাবেন। আমরা সব প্রস্তুতি শেষ করেছি। তবে এদের মধ্যে কেউ যেতে না চাইলে জোর করে পাঠানো হবে না।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫  
এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।