কক্সবাজার থেকে: মাত্র ১৬ মাস! বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট তো বটেই, বাংলাদেশে বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন শিল্প বিকাশের ইতিহাসে সময়টা খুবই নগন্ন। কিন্তু এ ক্ষুদ্র সময়ের মধ্যে অভ্যন্তরীণ রুটে আকাশ পথে যাত্রী বহনের ক্ষেত্রে এক অনন্য সাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স।
আর সেই সাফল্যের স্মারক হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কক্সবাজারের ‘লাবণী’ পয়েন্টে ফানুস ওড়ালো ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স।
বাংলাদেশের স্বনামধন্য প্রায় ৩শ ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন এ ফানুস ওড়ানো কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।
সন্ধ্যা ৭টা বাজার আগেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে জড়ো হন ইউএস বাংলার ‘কাস্টমার সাকসেস সামিট কক্সবাজ-২০১৫’-এ যোগ দিতে আসা ৩শ ট্রাভেল এজেন্সির সাড়ে তিন শতাধিক কর্মকর্তা। ঘড়ির কাটা সন্ধ্যা ৭টার ঘর স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গেই একটি ফানুসের পাদদেশে আটকানো মোমস্তূপে আগুন জ্বেলে দেন আবদুল্লাহ আল মামুন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ইউএস বাংলার লোগো লাগানো ফানুসটি সাফল্যের স্মারক বহন করে আকাশ পথে যাত্রা শুরু করে।
এরপর একেক করে প্রায় সাড়ে ৩শ ফানুস উড়াল দেয় আকাশের অজানা গন্তব্যে। মুহূর্তের মধ্যেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টের আকাশ ছেয়ে যায় ফানুসে। এক দিকে সমুদ্রের গর্জন, অন্যদিকে আকাশে ফানুসের মেলা- সে এক অভাবনীয় মুহূর্ত!
বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন খাতকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে যেসব ট্রাভেল এজেন্সি নিরসলভাবে কাজ করে যাচ্ছে, তাদের সম্মানে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স আয়োজিত এ ফানুস ওড়ানো কর্মসূচি উপভোগ করলেন ভ্রমণপিপাসু কয়েক হাজার মানুষ।
কথাও হলো তাদের কয়েকজনের সঙ্গে। এমনই একজন রংপুরের ট্রেড লিঙ্ক গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার আক্তারুল বাসার রিবু।
নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখুন, মনে হচ্ছে আলোর দোকান বসেছে। কত ফানুস। এসব ফানুস শুধুই ফানুস নয়, সামনের দিকে দ্রুত ধাবমান বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন শিল্প বিকাশের আরেক স্মারক চিহ্ন যেনো।
ছোট্ট সোনামণি রাকিবও অভিভূত সমুদ্র সৈকতে তারার মতো ফানুস উড়তে দেখে। বাবা-মায়ের জ্বালিয়ে দেওয়া ফানুসের দিকে আঙুল উচিয়ে বলে, ওই যে আমার ফানুস, আকাশে উড়ছে। চাচ্চু বলেছেন, যার ফানুস আকাশে থাকবে, তার মনের ইচ্ছা পূরণ হবে।
শুধুই কী বিনোদিত হওয়ার জন্য সমুদ্র সৈকতে ফানুস ওড়ানো?
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন শিল্প বিকাশের ইতিহাসে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সই মাত্র ১৬ মাসের মাথায় অভ্যন্তরীণ রুটের ৪৫ ভাগ যাত্রী বহন করছে।
এক বছরের মাথায় বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইন্সের অ্যাওয়ার্ড জিতেছে। পরিণত হয়েছে লাভজনক এয়ারলাইন্সে।
বেসরকারি এ বিমান সংস্থাটি মনে করে, তাদের এ সাফল্যের পেছনে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর অসামান্য অবদান রয়েছে। এ কারণে ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সম্মানিত করার জন্য ‘কাস্টমার সাকসেস সামিট কক্সবাজ-২০১৫’র আয়োজন। আর এ আয়োজনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সমুদ্র সৈকতে ফানুস ওড়ানো।
এ প্রসঙ্গে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, খুব স্বল্প সময়ে আমরা যে সাফল্য পেয়েছি, তার নেপথ্যে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর অবদান রয়েছে। তাই আমরা মনে করেছি, তাদেরকে সম্মান জানানো উচিত। সেই ভাবনা থেকেই এ আয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
এজেড/এসএস
** সূর্যের সঙ্গে মেঘের মিতালি