ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সরেজমিনে হরিপুর গ্রাম

মোয়াজ্জেমের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৫
মোয়াজ্জেমের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি ছবি: আরিফ জাহান/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শিবগঞ্জের (বগুড়া) হরিপুর থেকে: বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কচিক ইউনিয়নের হরিপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার শিয়া সম্প্রদায়ের ‘মসজিদ-ই-আল মোস্তাফা’য় দুর্বৃত্তদের গুলিতে মোয়াজ্জিন নিহত ও তিনজন আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে এলাকাবাসী।

তারা যে কোনো মূল্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।



দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত ও আহতদের স্বজন এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে কথা হলে এমন প্রতিক্রিয়াই জানা যায়।

বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শিবগঞ্জ উপজেলার শিয়া সম্প্রদায়ের মসজিদে হামলা চালিয়ে ওই মসজিদের মোয়াজ্জিন মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ওই মসজিদের ইমাম মাওলানা শাহিনুর, মসুল্লি আবু তাহের ও আফতাব আলী।

নিহত মোয়াজ্জেমের ছেলে মো. সাহাজুল প্রামাণিক বাংলানিউজকে জানান, তার বাবা কোনো অন্যায় করেননি। তিনি কারো টাকা-পয়সাও মেরে নেননি। তার সঙ্গে জমিজমা নিয়েও কারো কোনো বিরোধ নেই। তিনি ধর্মের বাইরে কোনো কথা বলেননি। তিনি অন্য কোনো ধর্মের অবমাননাও করেননি। সব সময় তিনি ধর্ম-কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। তবে তাকে কেন হত্যা করা হলো?

তার বাবার খুনিদের চেহারা তিনি দেখতে চান। তাদের দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিও করেন সাহাজুল।

নিহতের স্ত্রী কমেলা বিবি জানান, তার স্বামীর কোনো দোষ ছিল না। গ্রামের কারো সঙ্গে তার ঝগড়া-বিবাদ ছিলো না। শিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারী হয়ে সেই রীতি অনুযায়ী তিনি ইবাদত-বন্দেগি পালন করে আসছিলেন। কেন তারা গুলি করে নিরীহ এই মানুষটি হত্যা করলো ? এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

নিহতের ভাইয়ের মেয়ের জামাই কামরুজ্জামান, ভাতিজা রুবেল ইসলাম, শামীম ইসলাম, আলাল, হেলালসহ এলাকাবাসী একই কথা জানান।

মাহফেজ, দুলাল, মামুন, আসাদুল, গোলাম হোসেনসহ অন্য এলাকাবাসী জানায়, হরিপুর, চককানু, গোপিনাথপুর, চল্লিশছত্র, রামকান্দি ও আলাদপুর গ্রামের প্রায় ১১০ ঘর শিয়া সম্প্রদায় অনুসারী মানুষ বসবাস করেন। বাকিরা সুন্নি সম্প্রদায়ের মানুষ। কিন্তু এই দুই সম্প্রদায়ের অনুসারীদের মধ্যে কখনও কোনো বিরোধ দেখা দেয়নি। তাই এলাকাবাসী খুনের এই ঘৃণ্য ঘটনাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না।

তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে জানান, ঘটনার দীর্ঘ সময় পার হলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনও পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৫
এমবিএইচ/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।