ঢাকা: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের মনোনয়পত্র সংগ্রহের জন্য কোনো অর্থ পরিশোধ করতে না হলেও প্রার্থীদের ভোটার তালিকার সিডি (কমপেক্ট ডিস্ক) ক্রয় করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন সংখ্যার ভোটার এলাকার জন্য ‘পরিবর্তিত’ নির্দিষ্ট পরিমাণে জামানত দিতে হবে।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় প্রার্থীদের করণীয় বিষয়ে চিঠি, ইসির সহকারী সচিব রাজীব আহসান ইতোমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে- আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ২৩৬টি পৌরসভা নির্বাচনে ৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন, যা জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে। তবে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পৌরসভার বা ওয়ার্ডের ভোটার তালিকার সিডি ক্রয় করতে হবে। প্রতি ওয়ার্ডের ভোটার তালিকার সিডির মূল্য ৫শ’ টাকা।
মনোনয়নপত্র পূরণ:
ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে- মনোনয়নপত্র তিনটি খণ্ডে বিভক্ত। প্রথম খণ্ডের প্রথম অংশ প্রস্তাবকারী কর্তৃক পূরণ করতে হবে। দ্বিতীয় অংশ সমর্থনকারী কর্তৃক আর তৃতীয় অংশ মনোনীত (প্রার্থী) ব্যক্তি কর্তৃক পূরণ করতে হবে। মনোনয়নপত্রের দ্বিতীয় খণ্ডে রয়েছে প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্যাদি। এছাড়া তৃতীয় খণ্ড রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক পূরণ হবে।
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সংযুক্তি হিসেবে কাগজপত্র:
মনোয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীকে হলফনামা (প্রার্থীর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সত্যায়িত সনদপত্রসহ) সংযুক্ত করতে হবে। নির্বাচনী ব্যয়ের অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাব্য উৎসসমূহ ও ব্যয়ের বিবরণী এবং ১২ ডিজিটের টিআইএন সনদের কপি এবং সম্পদ বিবরণী সংযুক্ত সর্বশেষ দাখিল করা আয়কর রিটার্নের রসিদের কপি জমা দিতে হবে।
এছাড়া জামানতের টাকা জমা দেওয়ার ট্রেজারি চালান বা তফসিলি ব্যাংকের পে-অর্ডার বা পোস্টাল অর্ডারের কপি, রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে প্রার্থিতার সপক্ষে ১০০ জন ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকাও জমা দিতে হবে।
এদিকে, একজন প্রার্থী শুধুমাত্র একটি পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। একাধিক পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করলে সব মনোনয়নপত্র বাতিল হবে। তবে একই পদে একাধিক মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন, সেক্ষেত্রে জামানতের টাকা শুধু একটি মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিলেই চলবে।
প্রস্তাবক ও সমর্থক:
কোনো ভোটার প্রস্তাবকারী হিসেবে অথবা সমর্থনকারী হিসেবে মেয়র অথবা সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর বা সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের উদ্দেশে সংশ্লিষ্ট পদে একটির অধিক মনোনয়নপত্রে তার নাম ব্যবহার করবেন না। যদি কোনো ভোটার একই পদে অনুরূপ একাধিক মনোনয়নপত্রে তার নাম ব্যবহার করেন, তাহলে এমন সব মনোনয়পত্র বাতিল হবে।
জামানত:
মেয়র পদে নির্বাচনের ক্ষেত্রে, প্রতিটি মনোনয়নপত্রের সঙ্গে অনধিক ২৫ (পঁচিশ) হাজার ভোটার সংযুক্ত নির্বাচনী এলাকার জন্য ১৫ (পনের) হাজার টাকা, ২৫ (পঁচিশ) হাজার এক হতে ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার ভোটার আছে এমন নির্বাচনী এলাকার জন্য ২০ (বিশ) হাজার টাকা, ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার এক হতে ০১ (এক) লাখ ভোটারের নির্বাচনী এলাকার জন্য ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা এবং ১ (এক) লাখ বা তার বেশি ভোটার সংযুক্ত নির্বাচনী এলাকার জন্য ৩০ (ত্রিশ) হাজার টাকা জমাদানের প্রমাণ স্বরূপ ট্রেজারি চালান বা কোনো তফসিলী ব্যাংকের পে-অর্ডার বা পোস্টাল অর্ডার জমা জমা দিতে হবে।
কাউন্সিলর পদে (সাধারণ ও সংরক্ষিত) নির্বাচনের ক্ষেত্রে, প্রতিটি মনোনয়পত্রের সঙ্গে ০৫ (পাঁচ) হাজার টাকা জমাদনের ট্রেজারি চালান বা কোনো তফসিলি ব্যাংকের পে-অর্ডার বা পোস্টাল অর্ডার জমা দিতে হবে।
জামানতের টাকা ‘০৬/০৬০১/০০০১/৮৪৭৩’ খাতে জমা দিতে হবে।
প্রার্থীর (মেয়র) জন্য রাজনৈতিক দলের প্রত্যয়নপত্র:
মেয়র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সমপর্যায়ের পদাধিকারী বা তাদের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্র থাকতে হবে। যেখানে দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছে বলে উল্লেখ থাকবে (মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দলের মনোনয়ন সংযুক্তি-২ অনুসারে)।
কোনো দল কোনো পৌরসভায় একাধিক ব্যক্তিকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিতে পারবে না। একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিলে সংশ্লিষ্ট দলের সব প্রার্থীর মনোনয়পত্র বাতিল হবে।
এছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকে মনোনয়নে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম, পদবি, নমুনা স্বাক্ষরসহ একটি চিঠি আগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারকে এবং নির্বাচন কমিশনে দাখিল করতে হবে।
নির্বাচনের প্রচারের সময়:
কোনো দল, প্রার্থী বা তাদের পক্ষে কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান ভোটগ্রহণের দিনের ৩ (তিন) সপ্তাহ সময়ের আগে কোনো প্রকার প্রচারণা করতে পারবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৫
ইইউডি/আইএ
** ‘বিএনপির শর্ত মানার সুযোগ নেই’