ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিদেশি গোয়েন্দাদের সঙ্গে জেএমবির যোগাযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
বিদেশি গোয়েন্দাদের সঙ্গে জেএমবির যোগাযোগ মনিরুল ইসলাম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সঙ্গে একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার যোগাযোগ থাকার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

সোমবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মনিরুল ইসলাম।

  সম্প্রতি চার জেএমবি সদস্য গ্রেফতারের ঘটনায় বিস্তারিত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মনিরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মো. ইদ্রিস শেখ ১৯৮৫ সালে ভারত হয়ে পাকিস্তান গমন করে। ১৯৯০ সালে পাকিস্তানি নারীকে বিবাহ করে। ২০০২ সালে পাকিস্তানের একটি রাজনৈতিক দল ‘পাক্ মুসলিম এলাইন্স’ হতে জাতীয় নির্বাচন করে পরাজিত হন। এরপর ২০০৭ সালে ইদ্রিস বাংলাদেশে আসেন এবং বিভিন্ন বেআইনি কার্যক্রমসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি’র সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করেন।

যুগ্ম কমিশনার জানান, আটককৃত ৪ জেএমবি সদস্যই নিয়মিত পাকিস্তানে যাতায়াত করতো। এর মধ্যে মো. ইদ্রিস গত দুই বছরে ৪৮ বার বাংলাদেশ-পাকিস্তানে যাতায়াত করেছেন। তিনি ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করে মানবপাচার ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত রয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি আরো জানান, অভিযানের সময় ইদ্রিসের কাছ থেকে একটি স্পাই মোবাইল পাওয়া যায়। এটি অন্যান্য মোবাইল ফোনগুলো থেকে আলাদা। এই মোবাইলের মাধ্যমে সে সরাসরি বিদেশি একটি ইনটেলিজেন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে বিভিন্ন তথ্য পাচার করতো।

উদ্ধারকৃত ওই মোবাইল থেকে এবং তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি। ওই দেশের একজন নারী হাইকমিশনারের সঙ্গেও তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিলো।

এদিকে গ্রেফতারকৃত মো. মকবুল শরিফ সম্পর্কে তিনি বলেন, মকবুল ১৯৮৫ সালে ভারত হয়ে পাকিস্তান গমন করে এবং নিয়মিত ভাবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান যাতায়াত করতো। সে পাকিস্তানি কাপড়ের ব্যবসার অন্তরালে বিভিন্ন বেআইনি কার্যক্রমসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি’র সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করে আসছিলো।

‌এছাড়া গ্রেফতারকৃত মো. ছালাম একজন বিহারী। পাকিস্তানে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিলো। অপরদিকে, মো. মোস্তফা জামান পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের এ্যাসিসটেন্ট ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হিসেবে কাজ করেন বলে আমরা জানতে পারি।

মনিরুল ইসলাম জানান, আটককৃতরা বিদেশি মুদ্রা পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিলো। তারা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতামূলক হামলার পরিকল্পনা করছিলো। এজন্য তারা অর্থ ও কর্মী সংগ্রহের কাজ করছিলো।

রোববার (২৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর বিমানবন্দর ও খিলগাঁও থানা এলাকা থেকে জেএমবি সন্দেহে ৪ জনকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৬টি জেহাদী বই, ৩টি পাসপোর্ট, ৫টি মোবাইল সেট, ৪ হাজার পাকিস্তানি রুপি, ১৫শ’ ভারতীয় রুপি সহ বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
এসজেএ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।