ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রায়ে সন্তুষ্ট সাঈদের বাবা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
রায়ে সন্তুষ্ট সাঈদের বাবা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: শিশু আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বরখাস্তকৃত পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুলসহ তিনজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে (ডাবল) মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দেওয়া হয়েছে একজনকে।



সোমবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে রায় ঘোষণার পর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিশু সাঈদের বাবা আব্দুল মতিন। এ সময় উপস্থিত স্বজনরাও সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাঈদের বাবা আবদুল মতিন বলেন, এ রায় প্রত্যাশিত ছিলো। রায়ে আমি সন্তুষ্ট। দ্রুত রায় কার্যকরের দাবিও জানান তিনি।

সাঈদের মামা আশরাফুজ্জামান আযম বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

ফাঁসির দাবিতে সাঈদের সহপাঠীদের নিয়ে আদালত প্রাঙ্গনে এসেছিলেন নগরীর রায়নগর শাহ মীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কাবেরি রাণী দে।
রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, সাঈদ আমাদের স্কুলের একজন মেধাবী ছাত্র ছিলো। তার হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় হওয়ায় আমরা খুব খুশি। এখন চাই দ্রুততার সঙ্গে তা যেন কার্যকর করা হয়।

অন্যদিকে সাঈদ হত্যা মামলার রায় শুনতে সকাল থেকেই আদালত এলাকায় ভিড় করেন সাধারণ মানুষ। তবে সকালে আসামিদের হাজির না করায় রায় বিলম্বে দেওয়ার আভাস পাওয়া যায়। দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে অভিযুক্ত ৪ আসামিকে আদালতে নিয়ে আসার পর উত্তেজিত সাধারণ মানুষ- ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই স্লোগান দিতে শুরু করেন।

এ সময় সাঈদের স্বজন,  সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে ব্যাপক সমাগম তৈরি হয়ে।

দুপুরে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রশিদের দেওয়া চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত হন- বরখাস্তকৃত পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুল, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাকিব ও পুলিশের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা।

অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া ও ৩০২/৩৪ ধারায় হত্যার দায়ে দু'বার করে ফাঁসির আদেশ পেয়েছেন আসামিরা।

রায়ে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে দু’বারে দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছর করে দু’বারে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামি ওলামা লীগ নেতা মুহিবুর রহমান মাসুমকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

গত ১১ মার্চ নগরীর শাহ মীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আবু সাঈদ (৯) অপহৃত হয়।

অপহরণের তিনদিন পর ১৪ মার্চ নগরীর ঝর্ণারপাড় সোনাতলা এলাকায় পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুলের বাসার ছাদের চিলেকোঠা থেকে আবু সাঈদের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

২৩ সেপ্টেম্বর এ মামলায় চারজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন কোতোয়ালি থানার (ওসি-তদন্ত) মোশাররফ হোসেন।

চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন, সিলেটের বিমানবন্দর থানার সাবেক কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুল, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাকিব, পুলিশের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা এবং ওলামা লীগ নেতা মাহিব হোসেন মাসুম। অভিযুক্তদের মধ্যে এবাদুর, রাকিব ও গেদা ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন।

নিহত আবু সাঈদ সিলেট নগরীর রায়নগর শাহমীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ও রায়নগর দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪ নম্বর বাসার আব্দুল মতিনের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার এড়ালিয়াবাজারের খশিলা এলাকায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
এনইউ/এএএন/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।